মত দাঁড়াইয়া রহিল, কি বলিবে স্থির করিতে পারিল না। কিন্তু পরক্ষণেই সে নিজের ব্যবহারে লজ্জিত হইয়া রমণীসুলভ ভয় পরিত্যাগ করিয়া বারান্দায় লাফাইয়া পড়িল। কিছুই প্রথমে দৃষ্টিগোচর হইল না। খানিকক্ষণ নিরীক্ষণ করিয়া সে দেখিল, বারান্দার একটি দরজা হইতে খোলা উঠানে একটি আলোকরেখা পতিত হইয়াছে। সেই দিক লক্ষ্য করিয়া সে ধাবমান হইল, দেখিল, দরজাটি উন্মুক্ত এবং একজন রমণী সেই নির্জ্জন স্থানে দাঁড়াইয়া আছে। একটি ছোট লণ্ঠন মাটির উপর রক্ষিত। সেই লণ্ঠনটি হাতে তুলিয়া ভাল করিয়া দেখিতে গিয়া মাধব যাহা দেখিল, তাহাতে তাহার বিস্ময়ের অবধি রহিল না।
মাধব সবিস্ময়ে আর্ত্তনাদ করিয়া উঠিল, তারা!
তারাও বিস্ময়ে নির্ব্বাক হইয়াছিল, সে বলিল, মাধব!
কিন্তু উপর হইতে তখন ও সেই ব্যথিত আর্ত্তনাদ শ্রুত হইতেছিল।
ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ
তারা ও মাধব
শৈশব হইতেই মাধব ও তারা পরস্পর পরিচিত। তারার পিতা মাধবের মাতামহ একই গ্রামের অধিবাসী ছিলেন; শৈশবাবস্থায় মাধব ঘন ঘন সেখানে যাতায়াত করিত, তারা এই সময়ে তাহার খেলার সঙ্গিনী ছিল। দূর হইলেও তাহাদের পরস্পরের একটা সম্পর্ক ছিল এবং এই সম্পর্ক হেতুই অতি শিশুকাল হইতে তাহারা ঘনিষ্ঠভাবে মিলিত হইয়া খেলা করার সুযোগ পাইয়াছিল। তারা মাধব অপেক্ষা দুই চারি বৎসরের বড় হওয়া সত্ত্বেও মাধব তাহাকে ‘তারা’ বলিয়াই ডাকিত। মথুরের সহিত তাহার বিবাহ হইলেও তাহাদের পরস্পরের মনোভাবের পরিবর্ত্তন হয় নাই, শৈশবের অবাধ মিলনের ফলে যে প্রীতি তাহারা পরস্পরের