আমি জানি, বড় ঠাকরুণ তোকে ভালবাসেন। তুই গেলে তিনি খুশিই হবেন। চুপ করে আছিস কেন দিদি, কথা বল্।
মাতঙ্গিনী যেন বিরক্ত হইয়া ভ্রূকুঞ্চিত করিয়াছিল, কিন্তু মুখরা কনক সে দিকে লক্ষ্য না করিয়াই বলিতে লাগিল, হ্যাঁ হ্যাঁ, ও যাবে। তুমি যাও সুকীর মা, চানটা সেরে এস, তোমার সঙ্গে এখনি ও যাক। যাও, দেরি ক’রো না।
সুকীর মা আর বিলম্ব না করিয়া স্নান করিতে গেল। মাতঙ্গিনী বলিল, এতও আমার কপালে ছিল, কনক।
কনক উত্তেজিত হইয়া জোরের সঙ্গে বলিল, ‘না’ ব’লো না দিদি, এতে মত না দিলে তুমি আমার রক্ত খাবে। এখন যাও, সন্ধ্যে বেলায় আমি তোমার সঙ্গে দেখা করব। আর কথা ব’লো না |
কনক আর উত্তরের প্রতীক্ষা না করিয়া তাড়াতাড়ি তাহার কলসী তুলিয়া লইল এবং দ্রুতপদে জলের পারে গিয়া সুকীর মায়ের সঙ্গে স্নান করিতে নামিল।
ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ
আশ্রয়দাত্রী
মথুর ঘোষের বাসভবন পল্লীগ্রামের সমৃদ্ধির সহিত পরিচ্ছন্নতার অভাবের একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত।
বহুদূরবিস্তৃত ধানের ক্ষেতের ওপার হইতে বৃক্ষশাখাপত্রের অবকাশপথ দিয়া বাড়িটির ছাদের আলিসা ও কালো প্রাচীর নজরে পড়ে। কাছে আসিলে দেখা যায় যে স্থানে স্থানে প্রাচীন চুন-বালির সম্ভ্রান্ত বুনিয়াদ জরাজীর্ণ পুরাতন ইষ্টক-ভিত্তি ত্যাগ করিয়া খসিয়া পড়িবার