পাতা:রাজা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাগিয়ে দিলে, সেই আনন্দেই আমার সমস্ত ফেলে দিয়ে আসতে পারলুম। কিন্তু সে কি কেবল আমার কল্পনা । আজ কোথাও তার চিহ্ন দেখি না কেন ? সুরঙ্গম । তুমি যার কথা মনে ভাবছ সে তো আগুন লাগায় নি— আগুন লাগিয়েছিল কাঞ্চীরাজ । সুদৰ্শন । ভীরু ! ভীরু ! অমন মনোমোহন রূপ— তার ভিতরে মানুষ নেই! এমন অপদার্থের জন্তে নিজেকে এতবড়ো বঞ্চনা করেছি ? লজ্জা ! লজ্জা ! কিন্তু সুরঙ্গমা, তোর রাজার কি উচিত ছিল না আমাকে এখনো ফেরাবার জন্তে আসে ? (সুরঙ্গম নিরুত্তর ) তুই ভাবছিস ফেরবার জন্তে ব্যস্ত হয়ে উঠেছি ! কখনো না ! রাজা এলেও আমি ফিরতুম না। কিন্তু সে একবার বারণও করলে না! চলে যাবার দ্বার একেবারে খোলা রইল। বাইরের নিরাবরণ রাস্তা রানী বলে আমার জন্তে একটু বেদনা বোধ করলে না ? সেও তোর রাজার মতোই কঠিন ? দীনতম পথের ভিক্ষুকও তার কাছে যেমন আমিও তেমনি ! চুপ করে রইলি যে ? বল না তোর রাজার এ কী রকম ব্যবহার ! সুরঙ্গমা । সে তো সবাই জানে— আমার রাজা নিষ্ঠুর, কঠিন, তাকে কি কেউ কোনোদিন টলাতে পারে ? সুদৰ্শন। তবে তুই তাকে দিনরাত্রি এমন ডাকিস কেন ? মুরঙ্গমা। সে যেন এই রকম পর্বতের মতোই চিরদিন কঠিন থাকে— আমার কান্নায় আমার ভাবনায় সে যেন টলমল না করে। আমার দুঃখ আমারই থাক, সেই কঠিনেরই জয় হোক । f সুদৰ্শন । সুরঙ্গমা, দেখ, তো, ঐ মাঠের পারে পূর্বদিগন্তে যেন ধুলো উড়ছে। সুরঙ্গমা । হা, তাই তো দেখছি । ግ፭»