পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অত্যুক্তি। 切r○ গভীর ভাবে ভিতরে থাকিয়া যায়—বাহিরে তাহ বাস্তবের সংযত সাজ পরিয়া খাটি সত্যের সহিত এক পংক্তিতে বসিয়া পড়ে। আমরা হইলে বলিতাম, অন্ধকূপের মধ্যে হাজার লোক মরিয়াছে। ংবাদটাকে একেবারে একঠেলায় অত্যুক্তির মাঝ-দরিয়ার মধ্যে রওনা করিয়া দিতাম। হলওয়েল সাহেব একেবারে জনসংখ্যা সম্পূর্ণ নির্দিষ্ট করিয়া তাহার তালিকা দিয়া অন্ধকূপের আয়তন একেবারে ফুট-হিসাবে গণনা করিয়া দিয়াছেন । সে সত্যের মধ্যে কোথা ও কোন ছিদ্র নাই। ওদিকে যে গণিত শাস্ত্র তাহfর প্রতিবাদী হইয়া বসিয়া আছে, সেটা খেয়াল করেন নাই। হলওয়েলের মিথ্যা যে কত স্থানে কতরূপে ধরা পড়িয়াছে, তাহা অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় মহাশয়ের সিরাজদ্দৌল্লা গ্রন্থে ভালরূপেই আলোচিত হইয়াছে। আমাদের উপদেষ্ট কার্জন সাহেবের নিকট পদ্ধা পাইয়া হল ওরেলের সেই অত্যুক্তি রাজপথের মাঝখানে মাটি ফুড়িয়া স্বর্গের দিকে পাষাণ-অক্ষষ্ঠ উত্থাপিত করিয়াছে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সাহিত্য হইতে দুই বিভিন্ন শ্রেণীর অতুক্তির উদাহরণ দেওয়া যাইতে পারে। প্রাচ্য অত্যুক্তির উদাহরণ আরব উপন্যাস এবং পাশ্চাত্য অত্যুক্তির উদাহরণ রাডিয়ার্ড কিল্পিংয়ের “কিম্‌” এবং তাহার ভারতবর্ষীয় চিত্রাবলী। আরব্য উপন্যাসেও ভারতবর্ষের কথা আছে, চীনদেশের কথা আছে, কিন্তু সকলেই জানে তাহা গল্পমাত্র—তাহার মধ্য হইতে কাল্পনিক সত্য ছাড়া আর কোন সত্য কেহ প্রত্যাশাই করিতে পারে না, তাহা এতই সুস্পষ্ট । কিন্তু কিঞ্জিং ন্তাহার কল্পনাকে আচ্ছন্ন রাখিয়া এমনি একটি সত্যের আড়ম্বর করিয়াছেন যে, যেমন হলপূ-পড়া সাক্ষীর কাছ হইতে লোকে প্রকৃত বৃত্তাস্ত প্রত্যাশা করে, তেমনি কিল্লিঙের গল্প হইতে ব্রিটিশপাঠক ভারতবর্ষের প্রকৃত বৃত্তান্ত প্রত্যাশা না করিয়া থাকিতে পারে না । ব্রিটিশ পাঠককে এমনি ছল করিয়া জুলাইতে হয়। কারণ ব্রিটিশ পাঠক