পাতা:রাজা রামমোহন রায়-প্রণীত গ্রন্থাবলী.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

{ ২১5 ) পূর্বক করিলে চিত্ত শুদ্ধি হয় এরূপ ব্যবস্থা যদি বিপ্রনাম স্থির করিয়া থাকেন তবে বিপ্রনাম ইতঃপর ইহাও প্রকৃত্তি দিতে সমর্থ হইবেন, যে • স্মাৰ্ত্তষ্কৃত নরসিংহ পুরাণের বচন আছে যে “জলপ্রবেণী চানন্দং প্রমোদং বহিসাহসী । ভৃগুপ্ৰপাতী সৌখ্যম্ভ রণে চৈবাতিনিৰ্ম্মলং । অনশনযুতে। যঃ স্যাং সগচ্ছেত্ত ত্রিপিষ্টপং” যে ব্যক্তি জলে প্রবেশ করিয়া মরে সে আনন্দনাম স্বৰ্গ প্রাপ্ত হয়, সাহস পূর্বক অগ্নিতে প্রবেশ করিয়৷ ষে মরে সে প্রমোদ নাম স্বর্গ প্রাপ্ত হয়, পৰ্ব্বতাদি উচ্চদেশ হইতে পতন পূৰ্ব্বক যে মরে সে সেখ্য নামক স্বৰ্গকে পায়, যুদ্ধ পূর্বক যে মরে তাহার অতি নিৰ্ম্মল নাম স্বর্গ প্রাপ্তি হয়, আহার ত্যাগ পূর্বক যে মরে সে ত্রিপিটপ নাম স্বর্গ প্রাপ্ত হয়। অতএব ইহাতে নির্ভর করিয়া বিপ্রনাম কহিবেন যে, সঙ্কল্প ত্যাগ পূর্বক এ সকল প্রকারে শরীর ত্যাগ করিলে নিষ্কাম কৰ্ম্মের ন্যায় এই নানাবিধ আত্ম হত্যাও চিত্ত শুদ্ধির প্রতি কারণ হয়। এবং স্মাৰ্ত্তঃত এ বচনও পাঠ করিবেন “যঃ সৰ্ব্বপাপযুক্তোপি পুণ্যতী ৰ্থেষু মানবঃ । নিয়মেন ত্যজেৎ প্রাণান মুচ্যতে সৰ্ব্বপাতকৈঃ” । সকল পাপ যুক্ত হইয়াও যে মনুষ্য নিয়ম পূর্বক পুণ্য তীর্থে প্রাণত্যাগ করে সে সৰ্ব্ব পাপ হইতে মুক্ত হইবেক । ঐ বচন পাঠানস্তর বিপ্রনাম এ প্রর ত্তিও দিতে সমর্থ হইবেন যে কামনা ত্যাগ কৰিয়া তীর্থ মরণে চিত্ত শুদ্ধি হইবেক, কিন্তু বিপ্রনামার ইহাও অনুভব হইল না যে স্বৰ্গাদি কামনা না থাকিলে এ প্রকার আত্ম হনন রূপ কৰ্ম্মে প্রবৃত্তিই হইতে পারে না । এবং এ প্রকার দুঃসাহস কৰ্ম্মে যে প্রবৃত্তি সে তামসী প্রকৃত্তি হয়, যাহা গীতায় ও উপনিষদে বারম্বার নিষিদ্ধ করিয়াছেন, এই রূপ বিপ্রনাম ভবিষ্য পুরাণোক্ত নরবলি প্রদানের প্রবৃত্তিও দিবেন, যে যদ্যপিও এ ಸ್ಟ್ರ কৰ্ম্ম হয় কিন্তু কামনা ত্যাগ পূর্বক করিলে চিত্ত শুদ্ধি হইবেক, এবং কালিকা পুরাণোক্ত এ মন্ত্রও উচ্চৈঃসরে পাঠ করিবেন । “নর ত্বং বলি রূপেণ মম ভাগ্যাচুপস্থিত; প্ৰণমার্মি তত: সৰ্ব্বরূপিণং বলিরূপিণী" এবং এরূপ বিচারে বিপ্রনাম প্ৰবৰ্ত্ত হইবেন যে পূৰ্ব্ব পূৰ্ব্ব যুগে কি পণ্ডিত ছিলেন না এবং ইহার পূর্ব এই কলিকালেও কি পণ্ডিত ছিলেন না, দেখ নর বলি সত্যাদি যুগে হইয়া আসিয়াছে, জড়ভরত প্রভৃতির