বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাধারাণী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

#8 -- - अञ्जनौ চিকিৎসকের চিকিৎসা করিতেছিল। আমার নয়নাগ্রে যে রূপ অহরহ নাচিতেছিল, তাহার কথা কাহাকেও বলি নাই । ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ শচীন্দ্রের কথা ওছে ধীরে, রজনি ধীরে ধীরে ধীরে, আমার এই হৃদয়মন্দিরে প্রবেশ কর। এত দ্রুতগাৱিনী কেন ? তুমি অন্ধ, পথ চেন না, ধীরে, রজনি ধীরে। ক্ষুত্র। এই পুরী, আঁধার, আঁধার, আঁধার। চিরান্ধকার। দীপশলাকার স্বায় ইহাতে প্রবেশ করিয়া আলো ক্ষয় –দীপশলাকার স্থায় আপনি পুড়িবে, কিন্তু এ আঁধার পুরী আলো করিবে। ওহে ধীরে, রজনি ধীরে। এ পুরী আলো কর, কিন্তু দাহ কর কেন ? কে জানে যে, শীতল প্রস্তরেও দাহ করিবে—তোমায় ত পাষাণগঠিত, পাষাণময়ী জানিতাম, কে জানে যে, পাষাপেও দাহ করিবে ? অথবা কে জানে, পাষাণেও লৌহের সংঘর্ষণেই অগ্ন্যুৎপাত হয়। তোমার প্রস্তরধৰল, প্রস্তরস্নিগ্ধদৰ্শন, প্রস্তরগঠিতবং মূৰ্ত্তি যত দেখি, ততই দেখিতে ইচ্ছা হয়। অনুদিন, পলকে পলকে, দেখিয়াও মনে হয়, দেখিলাম কই ? আবার দেখি । আবার দেখি, কিন্তু দেখিয়া ত সাধ মিটিল স্থা । পীড়িতাবস্থায় আমি প্রায় কাহারও সঙ্গে কথা কহিতাম না। কেহ কথা কহিতে আসিলে ভাল লাগিত না। রজনীর কথা মুখে আনিতাম না—কিন্তু প্ৰলাপকালে কি বলিতাম না বলিতাম, তাহা স্মরণ করিয়া বলিতে পারি না। প্রলাপ সচরাচরই ঘটিত । শয্যা প্রায় ত্যাগ করিতাম না। শুইয়া শুইয়া কত কি দেখিতাম, তাহ বলিতে পারি না। কখন দেখিতাম, সমরক্ষেত্রে যবননিপাত হইতেছে—রক্তে নদী বহিতেছে ; কখন দেখিতাম, সুৰৰ্ণপ্রাস্তরে হীরকবৃক্ষে স্তবকে স্তবকে নক্ষত্র ফুটিয়া আছে। কখন দেখিতাম, আকাশমার্গে, অষ্টশশিসমন্বিত শনৈশ্চর মহাগ্রহ চতুশ্চন্দ্রবাহী বৃহস্পতির উপর মহাবেগে পতিত হইল—গ্রহ উপগ্রহ সকল খণ্ড খণ্ড হইয়া ভাঙ্গিয় গেল—আঘাতোৎপন্ন বহ্নিতে সে সকল জলিয়া উঠিয়া, দহমানাবস্থাতে মহাবেগে বিশ্বমণ্ডলের চতুর্দিকে প্রধাবিত হইতেছে। কখন দেখিতাম, এই জগৎ, জ্যোতিৰ্ম্ময় কান্তরূপধর দেবযোনির মূৰ্ত্তিতে পরিপূর্ণ; তাহারা অবিরত অস্বরপথ প্রভাসিত করিয়া বিচরণ করিতেছে ; ভাঙ্গাদিগের অঙ্গের সৌরভে আমার নাসারন্ধ