পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৮৪ মহারাণী শরৎসুন্দরীর জীবন-চরিত। এবং শান্তিময় মুখ দেখিয়া সকলেই মুগ্ধ ; কেহই তাহার নিকট কোনও কথা বলিতে পণ্ডশ্রম মনে করিত না । বালিকাকে সকলে দয়াবতী প্রবীণ বিবেচনায়, তাহাকে আপনার মুখ দুঃখের কথা জানাইত ! ব্রাহ্মণও আপনার বৃত্তান্ত জানাইয়া “সে দরিদ্র, বাঁড়াতে তাহার বিস্তরপোষ্য, দণ্ডের ষ্টাক। কোথায় পাইবে” বলিয়া আৰ্ত্তনাদ করিতে লাগিল । বালিকা তাহার দুঃখে দ্রবীভূত হইলেন, ব্রাহ্মণের অপরাধের প্রতি ভ্ৰক্ষেপও করিলেন না। এখন কিরূপে তাহার কষ্ট নিবারণ করিবেন, তাহা ভাবিয়াই ব্যাকুল হইলেন। পিতার নিকট এই বিষয় বলিল, তিনি সম্ভবতঃ ব্রাহ্মণের অপরাধের গুরুত্বে, অনুরোধ না শুনিতেও পারেন। কিন্তু, বালিকার নিজের এমন কি আছে, যে, তাহা দিয়া ব্রাহ্মণের উপকার করিবেন । পিতা, সময় সময় তাহাকে দুই একটা টাকা দিতেন, তাহ সমস্তই দানে নিঃশেষিত হইয়াছে বালিকা, অবশেষে চিন্তা করিয়া, তাহার পিতার একটী পুরাতন কৰ্ম্মচারীর নিকটে গিয়া, পাচটা টাকা ধার চাহিলেন । কৰ্ম্মচারী, তাহার কারণ জিজ্ঞাসা করিলে বালিকা, কোনই উত্তর না দিয়া অতি মলিনভাবে অধোমুখে রহিলেন কৰ্ম্মচারী আর অধিকক্ষণ, তাহ দেখিতে পারিল না। বালিকার স্বগীয় ভাবে সে, এককালে আত্মহারা হইয় তাহার বশবৰ্ত্তী হইল। আর দ্বিরুক্তি না করিয়া তখনই পাচট টাকা আনিয়া দিল । বালিকা, সেই টাকা আনিয়া গোপনে ব্রাহ্মণের হাতে দিলেন ; আর তাহাকে এই কথা প্রকাশ করিতে নিষেধ করিয়াই, দ্রুতবেগে চলিয়। গেলেন। ব্রাহ্মণ, কৃতজ্ঞতাপ্রকাশের অবকাশও পাইল না । ক্রমে দুই এক দিনের মধ্যেই এ কথা ভৈরবনাথের কর্ণগোচর হইল। তিনি কস্তার এই সদয় ব্যবহারে বরং সন্তুষ্ট হইলেন । র্তাহাকে নিকটে ডাকিয়া বলিলেন—“মা, একথ। আমাকে বলিলেই হইত।