পাতা:রামকৃষ্ণের কথা ও গল্প - স্বামী প্রেমঘনানন্দ (১৯৩৬).pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রামকৃষ্ণের কথা ও গল্প

বুঝতে পেরে সিংহ তাকে জলের ধারে নিয়ে গেল আর বললে,—“দেখ, জলে আমাদের ছায়া পড়েছে। আমিও যা, তুইও তা। কেন মিছে ভয় করিস? দেখ, আমার যেমন হাঁড়ির মত মুখ, তোরও তেমনি। আজ থেকে মনে রাখিস,—মেষ নয়, তুই পশুরাজ সিংহ। সমস্ত পশুগুলো তোকে ভয় করবে। আর মেষপালে যাসনে,—যা, বনে যা। তুই বনের রাজা।”

 সিংহের কথায় বাচ্চা একবার জলের দিকে আবার নিজের ও সিংহের দিকে তাকাচ্ছিল। তখনও ষোল আনা বিশ্বাস হয় নি, একটু একটু ভয় তখনও তার মনে হচ্ছিল।

 তারপর খানিকটা মাংস এনে সিংহ খেতে লাগল আর খাবার জন্য বাচ্চাকেও অনুরোধ করতে লাগল। বাচ্চা কিছুতেই মাংস খেতে চায় নি। শেষকালে সিংহ জোর করে খানিকটা মাংস খাইয়ে দিয়ে চলে গেল।

 সিংহের বাচ্চা, অন্তরে যে তার সিংহের শক্তি রয়েছে। মেষের সঙ্গে লালিত পালিত হওয়ায় তার মধ্যে সিংহভাব বিকাশ হয় নি। মেষপালে থাকতে সে নিজেকে মেষ বলেই মনে করত। কখনও সে জানত না যে, সে একটি সিংহ। আজ রক্তের স্বাদ পেয়ে আর সিংহের উপদেশে তার মনে সিংহভাব জেগে উঠল। তখন সে মাথা তুলে দাঁড়াল, মেঘের মত গম্ভীর স্বরে এক ডাক দিলে, তারপর

২০