পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ১১২ ] ইহা জ্ঞাত হইয়া তুমি তাহার বিপরীত কাৰ্য্য করিয়াছ, সুতরাং সেই অপরাধে তুমি অপরাধিনী হইয়া ক্লেশ পাইয়াছ। এই জন্য প্রভু ধ্যানপরায়ণ সাধকদিগের স্থান বনে ব্যবস্থা করিয়া গিয়াছেন । ধ্যান সম্বন্ধে যাহা কথিত হইল, তাহার দ্বারা সংসারত্যাগীদিগের পক্ষে ব্যবস্থা জানিতে হইবে । সংসারীরা সন্ন্যাসীর ধৰ্ম্ম আচরণ করিতে পারেন না এবং তাহ করা উচিত নহে । সংসারীদিগের স্বতন্ত্র ধৰ্ম্ম ও স্বতন্ত্র সাধন । সংসারী বলিলে কামিনীকাঞ্চনে পরিবেষ্টিত ব্যক্তিকে বুঝায়। সংসারীদিগের জন্যই সময়বিশেষে নব নব ধৰ্ম্মের অভু্যদয় হয়। সংসারীদিগের জন্য ভগবান বার বার অবতীর্ণ হইয়। থাকেন। যুগধৰ্ম্ম সংসারীদিগের নিমিত্ত প্রকটিত হয়। এই নিমিত্ত যুগধৰ্ম্ম পালন করা সংসারীদিগের কৰ্ত্তব্য । গৃহীদিগের সাধনের স্থান সংসার । ভগবান সৰ্ব্বব্যাপী অস্তৰ্য্যামী ; যে, যে ভাবে যে স্থানে তাহাকে চিন্তা করেন, তাহার মনোরথ সেই স্থানে সেইরূপে পূর্ণ করিয়া থাকেন । বলা হইয়াছে, মন লইয়। ধ্যানীদিগের সাধন। হইয়া থাকে এবং মনের বলাধানের নিমিত্ত ঠাহীকে সংসার পরিত্যাগ করিতে হয় । সুতরাং জনশূন্ত স্থানই তাহাদিগের ব্যবস্থ। সংসারীদিগের স্থান সংসার, তথায় মন বিলয় প্রাপ্ত হইয় থাকে। এক্ষণে জিজ্ঞাস্য হইতে পারে যে, গৃহীর কি লইয়। সংসারে সাধন করিবে ? যাহার যে পরিমাণে মন বিলুপ্ত হইবে, তাহার সেই পরিমাণে প্রাণ কাদিবে। যাহার প্রাণ যত ব্যাকুলিত হইবে, তাহার প্রাণে প্ৰাণেশ্বর যাইয়া সেই পরিমাণে অধিকার করিবেন। প্রাণ লইয়া সংসারে সাধনা করিবার নিমিত্ত রামকৃষ্ণদেব বলিয়। গিয়াছেন । মনের সাধন বনে, প্রাণের সাধন সংসারে ।