পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ২৩৫ ] হইলে এই সংসারের আর একছবি মানসক্ষেত্রে প্রকাশ হইয়া পড়ে। যে ব্যক্তি যেমন অধিকারী, সেই ব্যক্তির পক্ষে সংসার তেমনি ব্যবহার করে। সংসার বাস্তবিক উত্তম স্থান, তাহার সন্দেহ নাই। যিনি সংসারকে চিনিয়া কাৰ্য্য করেন, তিনি কখন বিপদগ্ৰস্ত হন না । প্রভু বলিতেন যে, সৰ্প ধরিবার পূৰ্ব্বে ধূলাপড়া মন্ত্র শিক্ষা করা কৰ্ত্তব্য। সৰ্প ধরা সংসারের ন্যায় এবং ধূলাপড়া শিক্ষা ব্রহ্মচর্য্যের ন্যায় অবস্থাবিশেষ। সংসারের সহিত প্রভু সৰ্পের তুলনা করিয়াছেন। সর্প বিষাক্ত জীব । তাহাকে সুবিধা দিলেই যে দংশন করিবে, তদ্বিষয়ে সন্দেহ নাই । কিন্তু সপ লইয়। ক্রীড়াও করিতে হইবে । সাপ লইয়। খেলায় কত চতুরতার আবখ্যক ? সপকে কখন হস্তে ধারণ করিতে হইবে এবং কখন গলায় জড়াইয়। দর্শকবৃন্দের আশ্চর্য্য সম্পাদন করিতে হইবে । সৰ্প দংশন হইতে রক্ষ পাইবার জন্য যেমন সপ ক্রীড়কের আপ্তসার করিয়া রাখে, সংসারে ক্রীড়া করিতে হইলে সেইরূপ আত্মকল্যাণ মন্ত্র অবগত থাক। কৰ্ত্ত ব্য। হিন্দুদিগের ব্রহ্মচর্য্যাবস্থায় তাহাই শিক্ষা দিবার উদ্দেশ্য ছিল । প্রভু সংসারকে সপোের সহিত তুলন। করিলেন কেন ? সংসার যদ্যপি প্রক ত সুখের স্থান হইত, তাহা হইলে প্রাণান্তক কালভুজঙ্গের সহিত সাদৃশ্য দেখাইতেন না ; অবং ইহার নিগূঢ় তাৎপৰ্য্য আছে। না বুঝিয়া, অজ্ঞাতসারে যে বিষধরের সংস্রবে আইসে, তাহার প্রাণনাশ হওয়া অবশ্যম্ভাবী । বিষধর তাহার পক্ষে সাক্ষাৎ শমন-স্বরূপ । কিন্তু যে সপ ধরিবে বলিয়া কৌশল এবং যন্ত্রাদি যত্ন সহকারে অভ্যাস করে, সে অনায়াসে তাহাকে আয়ত্তে আনিয়া বিষ ভাঙ্গিয়া ক্রীড়ার সামগ্ৰী করিয়া ফেলিতে পারে । সংসার-ভুজঙ্গকে লইয়া যদ্যপি ক্রীড়া করিতে হয়, তাহা হইলে সৰ্ব্ব প্রথমে তাহার নিদান জ্ঞাত হওয়া কৰ্ত্তব্য ।