পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৩৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ७४6 ] বিজ্ঞান ও দর্শন বিষয় লইয়া জীবনাতিবাহিত করিয়া যাইতেছেন, কেহ শারীরিক স্বচ্ছন্দতা সংরক্ষণ এবং সম্বৰ্দ্ধনের জন্য প্রাণপণে তাহারই চেষ্টা করিতেছেন, কেহ অন্ন বস্ত্রের ক্লেশ নিবারণের উপায়স্বরূপ জীবিকানিৰ্ব্বাহের নব নব পস্থা উদ্ভাবন করিবার জন্য জীবনোৎসর্গ করিতেছেন । কেহ মুষ্টিভিক্ষা দিয়া, কাহাকে অন্ন বস্ত্ৰ দিয়া, রোগীর রোগযন্ত্রণ বিমুক্ত করিয়া, কন্যাভারের অংশ লইয়া, ঋণীর ঋণ শোধ করিয়া, মুটের মোট তুলিয়া দিয়া, দয়ার কার্য্য করেন । কার্য্যবিশেষ লইয়। যদ্যপি আমরা তুলনা করিতে যাই, তাহা হইলে বিষম অসামঞ্জস্য ভাব উপস্থিত হইবে । কিন্তু স্থল কার্য্যের উদ্দেশ্য নিরূপণ করিয়া দেখিলে সৰ্ব্বস্থলে এক দয়া —এক অদ্বিতীয় দয়াকে-—বিরাজ করিতে দেখা যায়। মনুষ্যদিগকে লইয়া এইরূপে বৈশ্লেষিক প্রক্রিয়ার দ্বারা আলোচনা করিলে প্রত্যেক ভাব সম্বন্ধে এক অদ্বিতীয় জ্ঞানলাভ করা যায় এবং সেই ভাবের কার্য্য ব্যক্তিবিশেষে স্বতন্ত্র হইয়া থাকে। মানসিক সাধারণবৃত্তিপরম্পর বিচারপূর্বক ধৰ্ম্মঃত্তির দিকে অগ্রসর হইয়া দেখিলে অতি অদ্ভূত কপাট উদঘাটন হইয়া যায়। ধৰ্ম্মের সহিত ভগবানের সম্বন্ধ, ইহা কেহ অস্বীকার করেন না । ভগবানকে অনন্ত ব্যক্তি অনন্ত ভাবে উপলব্ধি করেন । যাহার যে প্রকার ধারণ}, যাহার যে প্রকার দর্শন, যাহার যে প্রকার শিক্ষা, ভগবান সম্বন্ধে তাহার সেই প্রকার জ্ঞান সঞ্চারিত হয়। অবস্থাবিশেষে, সামর্থ্যবিশেষে এবং সময়বিশেষে লোকে অহার করিতে বাধ্য হয় । যাহার দুই পয়সা ব্যয় করা সাধ্যাতীত, সে কেমন করিয়া চবাচুষ্য-লেহুপেয় সংগ্রহপূর্বক রসনার পরিতৃপ্তি করিতে পারিবে ? ধৰ্ম্মবিশ্বাস, ধৰ্ম্মানুষ্ঠান এবং ধৰ্ম্মজ্ঞানও সেইরূপ বুঝিতে হইবে ।