পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৪৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ 8>७ ] হইয়া বলিল, “মহাশয় । আমি বড় দরিদ্র । রাজ সরকারে চাকুরি করিয়া জীবন নিঃশেষিত করিলাম, কিন্তু জীর্ণ বস্ত্র পরিধান . করার অদৃষ্ট পরিবর্তন হইল না। আমি অতিশয় দীনহীন। অতি নীচ বৃত্তি অবলম্বনপূর্বক উদরামের সংস্থান করিতে হয়। তাহাও সম্পূর্ণরূপে নহে । কে আপনি দয়াময় ! দরিদ্রের মা বাপ ! এই দরিদ্রের প্রতি দয়। হইয়াছে, ইহা অপেক্ষা দয়ার কার্য্য কি হইতে পারে ? টাকা লইব কিনা জিজ্ঞাসা করিতেছেন ? টাকার জন্যে নাপিতগিরি কার্য্য করিতেছি। যদ্যপি লেখা পড়া শিখিতাম, তাহা হইলে রাজসরকারে একট। উচ্চ পদান্বিত হইয়া গাড়ি ঘোড়া চড়িতাম।” নাপিত নিস্তব্ধ হইলে উত্তর পাইল যে, “নাপিত! গৃহে ফিরিয়া যাও, আমি সাত ঘড়া টাকা রাখিয়া আসিয়াছি।” নাপিত এই কথা শুনিয়া একবার মনে করিল, হয় ত কে আমায় বিদ্রুপ করিল। এই কথা কহিতে কহিতে অমনি আমার ঘরে টাকা পৌছাইয়! আসিল, আমি কিছুই জানিতে পারি লাম না। আবার ভাবিল, ছি! ছি! আমার দুৰ্ব্বল মন সহসা বিশ্বাস করিতে চাহি না। আমি এ ব্যক্তির নিকট টাকা ভিক্ষা করিতে আসি নাই । উনি আপনি টাকা দিতে চাহিলেন, তখন টাকা না দিবেন কেন ? পরে আবার অন্তর ভেদ করিয়া দীর্ঘ নিশ্বাস উথিত হইয়া বলিতে লাগিল, ওরে অদৃষ্ট সঙ্গে সঙ্গে যায়। আমার যদ্যপি এমন অদৃষ্ট হইবে, তাহা হইলে নাপিতকুলে জন্মিলাম কেন ? সাত ঘড়া টাকা ভাবিলে বক্ষঃস্থল শুষ্ক হইয়া আইসে । আমি কখন এক ঘটি টাকা দেখি নাই, সাত ঘড়া টাকা আমার দগ্ধ কপালে কি কখন • সম্ভবে ? এইরূপ মনে মনে নানা প্রকার তর্ক বিতর্ক করিতে করিতে নিজ কুটিরে উপস্থিত হইল। সে দিন গৃহে তাহার গৃহিণী ও সস্তানাদি কেহ ছিল না। গৃহের দ্বার পূর্ববৎ রুদ্ধ দেখিয়া নাপিত মস্তকে হাত