পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৪৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ 8१8 ] তাহা সাধারণের পক্ষে সৰ্ব্বদা সহজ বলিয়া বোধ হয় না। সাংসারিক ভাবে মন রঞ্জিত হইয়া যাইলে সে মনে ইষ্ট মূৰ্ত্তি ধ্যান ও ধারণা অতীব কষ্টসাধ্য, এমন কি দুঃসাধ্য বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। বৈদিক মতে চিত্ত নিরোধ করিয়া পরব্রহ্মে ধ্যান করা যেমন কঠিন, পুরাণমতে বিষয়াসক্ত মন বিষয়বিরহিত হইয়া বিশ্ববিধাতার লীলারূপে অর্পণ করা তাহা অপেক্ষা কোনমতে স্বল্প কঠিন নহে। তমোগুণ প্রধান ব্যক্তিদিগের মানসিক শক্তি ক্রমে সাংসারিক ভাবে এমন হীনবল হইয়া পড়ে যে, তাহারা এমন কি লীলারূপেও মনাৰ্পন করিয়া শুদ্ধ ভাবে সেবা করিতে অশক্ত হইয়া থাকে। স্থলজগতের অতি স্থলভাবেই মন প্রাণ পরিপূর্ণ হইয়া যায়। মনোরাজ্যে ইন্দ্রিয় সমূহ একাধিপত্য স্থাপন করিয়া ফেলে। এরূপাবস্থায় বেদ পুরাণ আর স্থান পাইতে পারে না । মন নাই, অনন্ত চিন্তা করিবে কে ? বুদ্ধি নাই, ন্যায়ের বিচার করিবে কে? বৈজ্ঞানিক চক্ষু নাই, বৈশেষিক দর্শন শাস্ত্রের পারমাণবিক অভিনয় দর্শন করিবে কে ? ভক্তি নাই, রূপের সেবা করিবে কে ? এইরূপাবস্তায় তন্ত্রের সাধন কখন কখন ফলদায়ক হইয়া থাকে । তন্ত্রশাস্ত্রের কার্য্যকলাপ তমোগুণে পরিপূর্ণ। সাধারণ জীব যে ভাবে দিন যাপন করিয়া থাকে, তন্ত্রে তাহাই প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করিতে দিয়াছেন। একটা দুইটী মকারে জীব পরিতৃপ্তি লাভ করে, ইহাতে পঞ্চ মকারের অবতরণ হইয়াছে। পঞ্চমকারের জীব হাবুডুবু খাইতে থাকে। তন্ত্রের বামাচারমতে পঞ্চমকারের ব্যবহারের আদেশ দিয়া মহেশ্বর দক্ষিণাচারের সাত্ত্বিকভাবের ব্যবস্থা করিয়া রাখিলেন । দক্ষিণাচারে পঞ্চমকার নাই। তথায় শিব শক্তির স্কুল সন্মিলন নাই । আধার চক্রস্থিত কুণ্ডলিনী বা জীবাত্মা শিরস্থিত সহস্রদল কমলশায়ী-পরমশিব বা পরমাত্মার সহিত সন্মিলন হওয়া দক্ষিণাচারের