পাতা:রামদাস গ্রন্থাবলী প্রথম ভাগ.djvu/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় অধ্যায়। পুরাণে কোন কোন হিন্দু নৃপতির বর্ণমা দৃষ্ট হয়। “শ্ৰীমদ্ভাগবত” ও “ৰিফুপুরাণে” পূদ্র রাজা নন্যবংশীয় নৃপতিগণের সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রাপ্ত হওয়া যায়। উক্ত পুরাণে ভবিষ্যদ্বাণী-স্বরূপ লিখিত আছে, “মহানন্দির ঔরসে ও পূদ্রাণীর গর্ভে মহাবীৰ্য্যবান কুমার মহাপদ্ম-নন্দির জন্ম হইবে। তাছার সময় হইতে ক্ষত্রিয় ভূপালগণের অবনতি ও ক্রমে ক্রমে ভারতরাজ্য শূদ্ৰ নৃপবর্গের কয়তলগত হইবে । তিনি স্বীয় অসাধারণ শৌর্য্য-বীৰ্য্য-প্রভাবে ধরণীমণ্ডলের একচ্ছত্র অধীশ্বর হইয়া দ্বিতীয় ভার্গবের দ্যায় রাজ্য শাসন করিবেন। তাছার স্থমাল্য প্রভৃতি অষ্টপুত্র জন্মগ্রহণ করিয়া এক শত বৎসর পৃথিবী শাসন করিবে। কৌটিল্য নামক জনৈক ব্রাহ্মণের ক্ৰোধ-হুতাশন প্রদীপ্ত হইয়া এই নন্দবংশ ধ্বংস করিবে এবং তৎকর্তৃক মৌর্য্যবংশীয় চন্দ্রগুপ্ত পাটলিপুত্রের সিংহাসন প্রাপ্ত হইবেন” । “বৃহৎকথা” নামক প্রাচীন গ্রন্থে পাটলিপুত্রের ও যোগমনোর বিবরণ সংগৃহীত হইয়াছে। এই গ্রন্থ ১৯৫৯ খ্ৰীঃ অঃ সোমদেব ভট্ট কাশ্মীরাধিপতি হর্ষদেবের পিতামহীর মনোরঞ্জনার্থ রচনা করেন । বিশাখদত্ত *মুদ্রারাক্ষস” নামক নাটকে চাণক্য পণ্ডিতের অসাধারণ বুদ্ধিপ্রভাবে চন্দ্রগুপ্তের পাটলিপুত্রের সিংহাসনারোহণ ও নন্দবংশের ধ্বংস এবং রাক্ষসের প্রভুপরায়ণতার অতি উত্তম ৰণমা করিয়াছেন। চন্দ্রগুপ্ত মহানন্দের মুরানামী লীচজাতীয় দাসীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন । মগধদেশস্থ পাটলিপুত্র নগরী ইহার স্নাজধানী ছিল। মুদ্রারাক্ষসে পাটলিপুত্রের অপর নাম ‘কুসুমপুর’ লিখিত আছে। “বায়ুপুরাণের” মতানুসারে কুসুমপুর বা পাটলিপুত্র, অজাতশত্রুর পৌত্র রাজা উদয় কর্তৃক নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল, কিন্তু “মহাবংশের” বর্ণনানুসারে উদয় অজাতশত্রুর পুত্র ছিলেন। এই নগরী শোণ বা হিরণ্যবাহু নদের তীরে স্থাপিত ছিল । * স্বতরাং আধুনিক পাটনা, প্রাচীন পাটলিপুত্র নামের অপভ্রংশ

  • শোণে। হিরণ্যবাহুঃ স্থাৎ—ইত্যমরকোষঃ । এতদনুসারে শোণ মঙ্গের অপর নাম ষ্ট্রিরণ্যস্বাছ । ইহার তীরে অবস্থিত ছিল, এ কথায় আধুনিক পাটনা প্রাচীন পাটলিপুত্র নহে বলিয়া বোধ হয়। কেন না আধুনিক পাটনা গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। বোধ হয়, পাটনা জেলার অংশ বিশেষে প্রাচীন পাটলিপুত্র অবস্থিত ছিল । [ জীমণিমোহন সেন ।