পাতা:রামদাস গ্রন্থাবলী প্রথম ভাগ.djvu/৪২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাণিনি । 834 রণের কিছুমাত্র প্রভূত নাই, সুতরাং ব্যাকরণের সহিত তাদৃশ শব্দের কোন ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ নাই। ইহা সত্য কি অসত্য, নিদর্শন দেখাইতেছি। পুরাণে একটি শব্দ আছে “পঞ্চাম্র” ; “পঞ্চাম্ররোপা নরকং ন যাতি " বে পঞ্চাম্র রোপণ করে তাহার নরকে গমন হয় না। এই পঞ্চাম্র শব্দটির অর্থ পাণিনি ৰলিবেন, পাচটি আম্রবৃক্ষ। বস্তুতঃ তাহা নহে। নিম্ব, অশ্বথ, বট, জাতিপুষ্প, দাড়িম্ব, এই সকল বৃক্ষ একত্র রোপণ করিলে তৎসমুদায়কে পঞ্চাম্র বলে ; ইহাতে আস্রেব নাম গন্ধও নাই, অথচ ইহা পঞ্চাম্র হইল । যদিও পঞ্চাম্র শব্দটির উৎপত্তি পাণিনির পরে হইয়া থাকে এমতও হয়, তথাপি তৎপৰবৰ্ত্তী আচার্য্যেয় বা ব্যাকরণকর্তারা তাহা ত্যাগ করিবেন কেন ? ইহাতে বুঝিতে হইবে যে, ব্যাকরণ-নিয়মেব মধ্যে তাদৃশ শবেব সমাবেশ করিবার সম্ভাবনা নাই এবং তজ্জন্তই ব্যাকরণে তাদৃশ শব্দের বর্জন আছে। আর একটা শব্দ আছে “ষোড়শী”। এই শব্দের অর্থ পাণিনি বলিবেন, ষোল সংখ্যার পুবণী। কাব্য লেখকেবা বলিবেন “যুবতী স্ত্রী।” পুরাণে যর্ণিত আছে, তীর্থস্থলে প্রদত্ত উনবিংশ পিণ্ড ; আবার বেদে বলে, একটি যজ্ঞপাত্র অর্থাৎ সোমরস গ্রহণের পাত্র। এই ষোড়শী শব্দটি পাণিনি কি অন্ত কোন ব্যাকরণের মতে যজ্ঞপাত্র বুঝা যায না । যুক্তিতে দেখা যার, ইহ পাণিনির ੇ উৎপন্ন হইলে পাণিনি ব্রাহ্মণদিগের সর্বস্বধন সোমের পাত্র বিস্তৃত হইয়া ষোল সংখ্যার পূর্বণ মাত্র বলিয়া ক্ষান্ত হইতেন না !! কিন্তু পাঠকগণ, বলিয়া দিতেছি, ইহা পাণিনির চিরপবিচিত বজুর্বেদের সহস্র স্তানে আছে—“অতিরাত্রে ষোড়শীং গৃহাতি নাতিরাত্রে ষোড়শং গৃহাতি” ইত্যাদি । অতএব, কেবল মাত্র ব্যাকরণস্থত্রের দ্বারা কোন ইতিবৃত্ত নির্ণয় হইতে পারে না। যেমন একমাত্র ব্যাকরণেব দ্বারা কোন ইতিহাস নির্ণয় হয় না, সেইরূপ, এক শব্দকে দুই ব্যক্তি দুই অর্থে ব্যবহাব কয়িল বলির সেই দুই জনের মধ্যে একটা লম্বমান কালনিবেশ করাও যায় না। এইরূপ শিথিল-মূল যুক্তির আশ্রয় লইয়া আচাৰ্য্য গোল্ডষ্টকর ন্যায়, সাঙ্খা, বেদান্ত, মীমাংসা, উপনিষদ, আরণ্যক, রামায়ণ, মহাভারত প্রভৃতি সমুদর আর্ষ গ্রন্থকে পাণিনির পরভাবী বলিয়া লোকের বৃথা মোহ জন্মাইয়া দিয়া