পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেদান্তচন্দ্ৰিক »8ሳ সাক্ষাৎ উপাসিত হন না পরম্পর উপাসনা দৃঢ়তর বিশ্বাসে সর্বত্র সমান সাক্ষাৎ উপাসনা উপা[ি৪৬]ম্ভ স্বরূপসাক্ষাৎকার ব্যতিরেকে হয় না। অতএব ব্ৰহ্মোপাসনা সাক্ষাৎ হইতে পারে না ব্ৰহ্মস্বরূপের যে সাক্ষাৎকার সেই তত্ত্বজ্ঞান উপাসনা নয় উপাসনাসম্বাদি ভ্ৰমাত্মক জ্ঞানবিশেষ ভ্ৰমাত্মক জ্ঞান দুই প্ৰকার হয়। ফলসম্বাদি অর্থাৎ যে ভ্ৰমাত্মক জ্ঞানেতে বাস্তব ফলের লাভ হয় ও বিসম্বাদি অর্থাৎ যে ভ্ৰমাত্মক জ্ঞানেতে ফল লাভ হয় না। যেমন মাণিক্যপ্ৰভাতে মাণিক্যবুদ্ধিতে প্ৰবৃত্তের বাস্তব মাণিক্যপ্ৰাপ্তি হয় এবং শুক্তিকাতে রজতজ্ঞানে প্ৰবৰ্ত্তমান ব্যক্তির রাজতলাভ হয় না ৷ ০ ৷৷ অতএব দ্বৈতবাদী অর্থাৎ কাৰ্য্যকারণের ভেদবাদীরো মতে যে যে স্থানে যাহাকে দৃঢ়তর বিশ্বাসে ঈশ্বরবুদ্ধিতে কিম্বা তত্তদ্বিশেষ দেবতাভজ্ঞানে উপাসনা করে সে অবশ্য ঐ এক সর্বত্রাবস্থিত চেতনারূপী ঈশ্বরকেই উপাসনা করে। ফলপ্ৰাপ্তিও স্বস্ব উদ্দেশানুসারে ঐ ঈশ্বর হইতেই হয়। যদি ঈশ্বর উপাসিত না হন তবে সর্বফলদাতা তিনি হন না এক উপাসিত হয়। অন্য ফলদাতা হয় এমন কখনো হইতে পারে না বস্তুতঃ বেদান্ত অভেদবাদী হইয়া যদি ভেদবাদী হন তবে বেদ স্বতঃপ্ৰমাণ হইতে পারেন না পর্যতঃপ্ৰেমাণই হন স্বতঃপ্ৰমাণ [ ৪৭ ] সেই হয় যে অন্যকে অপেক্ষা না করিয়া স্বার্থ প্ৰতিপাদন আপনি করে যেমন রাজা জ্ঞা । পরীত: প্ৰমাণ সেই হয় যে অন্যকে অপেক্ষা করিয়া স্বাৰ্থ প্ৰতিপাদন করে। যেমন মন্ত্রীর আজ্ঞা । যদি স্বতঃপ্রমাণ বাক্যবিশেষ না মান তবে কোনহ ব্যবহার সিদ্ধ হইতে পারে না। উত্তরোত্তর প্ৰমাণান্তরাকাঙক্ষাতে কোনহ বাক্য প্ৰমাণ হইতে পারে না। তবে ব্যাবহারিকরূপে সিদ্ধ হইতে পারে স্বয়ং অসিদ্ধ অন্যের সাধক হইতে পারে না। অতএব সকল মনুষ্যকে স্বস্ব ব্যবহার নির্বাহার্থে স্বতঃপ্ৰমাণ বাক্যবিশেষ মানিতে হইবে অতএব আবালবৃদ্ধবনিতাপ্ৰসিদ্ধ যে ভেদ তৎপ্রতিপাদক যে বেদ সে প্রমাণান্তরেতে জ্ঞাত অর্থের প্রতিপাদক হইয়া। আপনি সহজ ধৰ্ম্ম স্বতঃপ্রামাণ্য হইতে চুত্যুত হন। অতএব বেদ রহস্যার্থবেত্তা বেদান্তীরা অদ্বৈতবাদী হন যেহেতুক অদ্বৈত অর্থাৎ অভেদ বেদান্ত ব্যতিরেকে অন্য কোন প্ৰমাণে জ্ঞাত নয়। অতএব হে সৰ্ব্বজাতীয় সংপুরুষেরা শুন তোমারদের মধ্যে যদি কেহো কখনো সর্বত্ৰ সম পরমেশ্বর রূপ পরমধামকে পাইতে ইচ্ছা করো কিম্বা প্ৰাপ্ত হইয়া থাকে। তবে কি স্বস্ব স্বতঃপ্ৰমাণবাক্যরূপ শাস্ত্ৰেতে দশিত ও প্ৰাচীন পণ্ডিতেরাদের [ ৪৮] কতৃক পরিষ্কারিত ও গত যে পথ তাহাতে যাও না। . কিম্বা আপনারা গিয়া সে পথে কণ্টক কৰ্দম প্ৰক্ষেপ করো কিম্বা সে পথ ত্যাগ করিয়া নূতন পথ কল্পনা কর স্বস্ব শাস্ত্ৰে বিহিত পথে যে চলে সেই ফলভাগী হয়। অতএব যজ্ঞ প্ৰতিমাদি পুজাদি কৰ্ম্মযোগ ও জ্ঞানযোগাদিরূপ অনেক পথ ঐ ঈশ্বরপ্রাপ্ত্যর্থে সকলোরি প্রাচীন শাস্ত্ৰেতে দশিত ও মহাজনপরিষ্কারিত আছে তাহাতে এই বিশেষ কেহ সকল পথ মানে কেহ বা কিছু মানে কিছু না মানে অৰ্দ্ধজরতীয়ান্যায়াশ্রয় করে৷ আর যদি মন্দির মসজিদ গির্জা প্রভৃতি যে কোন স্থানে যে কোন বিহিতক্রিয়াদ্বারা শূন্য স্থানে ঈশ্বর উপাস্ত হন তবে কি মুঘটিত স্বর্ণমৃত্তিকাপাষাণকাষ্ঠাদিতে ঐ ঈশ্বরের উপাসনা করাতে ঈশ্বরের অসন্মান করা হয়। কিম্বা দৃষ্টিকৌরূপ্য হয় স্বগৃহাগত প্ৰিয় বন্ধুকে গৃহমধ্যে স্বর্ণাদিপীঠে বসাইয়া গন্ধপুষ্পাদি