ঈশোপনিষৎ [ ১৮১৬ খ্ৰীষ্টাব্দের জুলাই মাসে প্ৰকাশিত ] ৷ ভূমিকা ৷ ওঁ তৎ সৎ । ভগবান বেদব্যাস ব্ৰহ্মসূত্রের দ্বারা ইহা ব্যক্ত করিয়াছেন যে সমুদায় বেদ একবাক্যতায় বুদ্ধি মন বাক্যের অগোচর যে ব্ৰহ্ম কেবল তঁহাকে প্ৰতিপন্ন করিতেছেন সেই সকল সূত্রের অর্থ সর্বসাধারণ লোকের বুঝিবার নিমিত্তে সংক্ষেপে ভাষাতে বিবরণ করা গিয়াছে এক্ষণে দশোপনিষৎ যে মূল বেদ ও যাহার ভাষ্য ভগবান শঙ্করাচাৰ্য্য করিয়াছেন তাহার বিবরণ সেই ভাষ্যের অনুসারেতে ভাষাতে করিবার যত্ন করা গিয়াছে সংপ্ৰতি সেই দশোপনিষদের মধ্যে যজুৰ্বেদীয় ঈশোপনিষদের ভাষাবিবরণকে ছাপানো গেল আর ক্রমে ক্ৰমে যে যে উপনিষদের ভাষাবিবরণ পরমেশ্বরের প্রসাদে প্ৰস্তুত হইবেক তাহা পরে পরে ছাপানো যাইবেক । এই সকল উপনিষদের দ্বারা ব্যক্তি হইবেক যে পরমেশ্বরের এক মাত্ৰ সৰ্ব্বত্র ব্যাপী আমাদের ইন্দ্ৰিয়ের এবং বুদ্ধির অগোচর হয়েন তঁহারি উপাসনা প্ৰধান এবং মুক্তির প্রতি কারণ হয় আর নাম রূপ সকল মায়ার কাৰ্য্য হয়। যদি কহ পুরাণ এবং তন্ত্রাদি শাস্ত্ৰেতে যে সকল দেবতাদের উপাসনা লিখিয়াছেন সে সকল [২] কি অপ্ৰমাণ আর পুরাণ এবং তন্ত্রাদি কি শাস্ত্র নহেন। তাহার উত্তর এই যে পুরাণ এবং তন্ত্রাদি অবশ্য শাস্ত্র বটেন যেহেতু পুরাণ এবং তন্ত্রাদিতেও পরমাত্মাকে এক এবং বুদ্ধি মনের অগোচর করিয়া পুনঃ২ কহিয়াছেন। তবে পুরাণেতে এবং তন্ত্রাদিতে সাকার দেবতার বর্ণন এবং উপাসনার যে বাহুল্যমতে লিখিয়াছেন সে প্ৰত্যক্ষ বটে। কিন্তু ঐ পুরাণ এবং তন্ত্রাদি সেই সাকার বর্ণনের সিদ্ধান্ত আপনিই পুনঃ২ এইরূপে করিয়াছেন যে যে ব্যক্তি ব্ৰহ্মবিষয়ের শ্ৰবণ মননেতে অশক্ত হইবেক সেই ব্যক্তি দুষ্কর্মে প্ৰবৰ্ত্ত না হইয়া রূপ কল্পনা করিয়াও উপাসনার দ্বারা চিত্ত স্থির রাখিবেক পরমেশ্বরের উপাসনাতে যাহার অধিকার হয় কাল্পনিক উপাসনাতে তাহার প্রয়োজন নাই। প্রমাণ স্মাৰ্ত্তধৃত যমদগ্নির বচন৷ চিন্ময়স্তাদ্বিতীয়স্য নিষ্কলম্বন্যাশারীরিণঃ। উপাসকানাং কাৰ্য্যাৰ্থং ব্ৰহ্মণো রূপকল্পনা। রূপস্থানাং দেবতানাং পুংস্ত্র্যাংশাদিককল্পনা। জ্ঞানস্বরূপ অদ্বিতীয় উপাধিশ্বন্ত শরীর রহিত যে পরমেশ্বর তঁহার রূপের কল্পনা সাধকের নিমিত্ত্বে
