পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথ্য প্ৰদান ye ܓܠ চামরকে অশ্বলোম-কহিয়া নিন্দ করে” উত্তর, অনেক দুৰ্জন এমত ছিলেন এবং আছেন যে উত্তমকে অধম কহিয়া থাকেন, সর্বদেবোত্তম মহাদেবকে দক্ষ কি দেবাধ্যম কহে নাই, আর তদুচিত শাস্তি সে নিন্দকের কি হয় নাই । পুনরায় লিখেন যে “কোন সুজনই বা তক্রকে দুগ্ধ ও বালুকাকে শর্করা, অশ্বলোমকে চামর-কহিয়া প্ৰশংসা করেন” উত্তর, উত্তমের স্বল্পকে বৃহৎ ও ক্ষুদ্রকে মহৎ কহিয়া প্ৰশংসা করিয়াছেন, পুরাণে স্তুতিবাদ সকল তাতার প্রত্যক্ষ প্ৰমাণ হয়। মহাভারতের আদিপর্বে গরুড়ের প্রতি দেবতাদের উক্তি (তৃত্বমন্তকঃ সৰ্ব্বমিদং ধ্রুবাঞবং । ) হে গরুড় নিত্যানিত্যস্বরূপ সমুদায় জগৎ তুমি হও । বস্তুত পরনিন্দাই দুর্জনের জীবনোপায় হয় । ” আমরা প্ৰথম উত্তরে লিখিয়াছিলাম যে ব্রহ্মনিষ্ঠ এমত কহেন না যে আমি ব্ৰহ্মকে জানি অতএব যে এমত কহে সে অবশ্যই কৰ্ম্ম ব্ৰহ্ম উভয়ভ্ৰষ্ট হয়, এবং কেনশ্রুতি ইহার প্রমাণ লিখিয়াছিলাম তাহাতে ধৰ্ম্মসংস্কারক ৫৯ পৃষ্ঠে ১২ পংক্তিতে লিখেন যে “এই কপট বাক্যের দ্বারা এই বোধ হয় কি না যে ভক্তিতত্ত্বজ্ঞানী মহাশয় আপনাকে আপনি ব্ৰহ্মজ্ঞানী কহিয়াছেন। অতএব তিনি উভয়ভ্ৰষ্ট ও ত্যাজ্য হয়েন কি না” উত্তর, যোগবশিষ্ঠের বচন নিন্দার্থবাদ না হইয়া যথার্থবাদ যদি হয় তবে উভয়বিভ্ৰষ্ট ও ত্যাজ্য সেই হইবেক যে সংসারসুখে আসক্ত হইয়া কহে যে আমি ব্ৰহ্মকে জানি। তাহাতে এ দুইয়ের প্রথম দোষের বিষয়ে, অর্থাৎ সংসারে আসক্তি, এ অপবাদে দুৰ্জনের মুখ হইতে নিস্তার নাই যেহেতু কি ইদানীন্তন কি পুর্বযুগে গৃহস্থ ব্ৰহ্মনিষ্ঠেদের বিষয়ব্যাপার দেখিয়া কেহ বিষয়াসক্তির দোষ তাহাদিগকে দিলে ইহার অপ্ৰমাণ করা লোকের নিকট দুষ্কর হয়, কিন্তু দ্বিতীয় দোষের অপবাদ দিলে দুৰ্জনকে নিরুত্তর অনায়াসে করা যায়, যেহেতু তঁহাদের প্রকাশিত শত ২ পুস্তক আছে এবং সর্বদা কথোপকথন করিয়া থাকেন। ওই সকলের দ্বারা প্ৰমাণ হইবেক যে র্তাহারা সর্বদাই স্বীকার করেন যে ব্ৰহ্মস্বরূপ কোন মতে আমরা জানি না এবং পরমেশ্বরের পরিচ্ছিন্ন হস্ত পদ শিশ্নোদর আছে অথবা তিনি যথার্থ আনন্দরূপ শরীরে স্ত্রীসংসর্গ ও অশুচি পরিত্যাগাদি ক্রিয়া করিয়াছেন ইহা কদাপি কহেন না অতএব দুর্জনেরা যাবৎ প্রমাণ করিতে না পারেন যে আমরা ব্ৰহ্ম জানিয়াছি। এমত স্পৰ্দ্ধা করিয়া থাকি তাবৎ আমাদের প্রতি, ব্ৰহ্মস্বরূপ জানি, এ প্রাগলভ্যোর উল্লেখ করা তাহাদের কেবল দ্বেষ ও পৈশুন্যের জ্ঞাপক মাত্র হইবেক । ৬১ পৃষ্ঠে যাহা লিখেন তাহার তাৎপৰ্য্য এই যে প্রণব ও গায়ত্রী এ দুয়ের জপ মাত্রে অথচ বিহিতানুষ্ঠানরহিত হইলে কোন মতে জ্ঞানানুষ্ঠানের অধিকার হয় না ।