পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চারি প্রশ্নের উত্তর Σ Σ মৃত্যুকে প্ৰাপ্ত হয় । “অবিদ্যায়াং বহুধা বৰ্ত্তমান বিয়ং কৃতাৰ্থ ইত্যাভিমন্যান্তি বালাঃ । যৎ কম্মিণো ন প্ৰবেদয়ন্তি রাগাৎ তেনাতুরাঃ ক্ষীণলোকাশচাবস্তে”। অর্থাৎ যে সকল ব্যক্তি অজ্ঞানরূপ কৰ্ম্মকাণ্ডের অনুষ্ঠানে বহু প্রকারে নিযুক্ত থাকিয়া অভিমান করে যে আমরা কৃতকাৰ্য্য হই সে অজ্ঞান লোকের কৰ্ম্মফলের বাসনাতে অন্ধ হইয়া তত্ত্বজ্ঞান জানিতে পারে না। অতএব সেই সকল ব্যক্তি কৰ্ম্মফল ক্ষয় হইলে দুঃখে মগ্ন হইয়া স্বৰ্গ হইতে চু্যত হয়। আর অপ্ৰতিষ্ঠিত জ্ঞানীর বিষয়ে ভগবদগীতা কহেন। “অর্জন উবাচ। অযতিঃ শ্ৰদ্ধয়ো পেতে যোগাচ্চালিতমানসঃ। অপ্ৰাপ্য যোগসংসিদ্ধিং কাং গতিং কৃষ্ণ গচ্ছতি ৷ কচ্চিন্নোভয়বিভ্ৰষ্টশ্চিছন্নাভ্ৰমিব নশ্যতি । অপ্ৰতিষ্ঠো [৯] মহাবাহো বিমূঢ়ো ব্ৰহ্মণ: পথি”৷ অৰ্জন কহিতেছেন যে ব্যক্তি প্ৰথমতঃ শ্ৰদ্ধান্বিত হইয়া জ্ঞানাভ্যাসে প্ৰবৃত্ত হয় পশ্চাৎ যত্ন না করে এবং জ্ঞানাভ্যাস হইতে বিরত হইয়া বিষয়াসক্ত হয় সে ব্যক্তি জ্ঞানফল যে মুক্তি তাহা না পাইয়া কি গতি প্ৰাপ্ত হইবেক । সে ব্যক্তি কৰ্ম্মত্যাগপ্ৰযুক্ত দেবস্থান পাইলেক না এবং জ্ঞানের অসিদ্ধতাপ্ৰযুক্ত মুক্তিকে না পাইয়া নিরাশ্রয় ও ব্ৰহ্মপ্রাপ্তিতে বিমূঢ় হইয়া ছিন্ন মেঘের ন্যায় নষ্ট হইবেক কি না । ভগবান কৃষ্ণ এই প্রশ্নের উত্তর দিতেছেন। “ভগবানুবাচ। পাৰ্থ নৈবেহ নামুত্র বিনাশস্তস্য বিদ্যতে। নাহি কল্যাণকৃৎ কশ্চিৎ দুৰ্গতিং তাত গচ্ছতি ৷ প্ৰাপ্য পুণ্যকৃতাং লোকানুষিত্ব শাশ্বতীঃ সমাঃ । শুচীনাং শ্ৰীমতাং গেহে যোগভ্ৰষ্ট্যোহভিজায়তে” ৷ তথা । “তত্ৰ তং বুদ্ধিসংযোগং লভতে পৌৰ্ব্বদেহিকং | যততে চ ততো ভূয়: সংসিদ্ধৌ কুরুনন্দন”। হে অৰ্জ্জুন সেই ব্যক্তির ইহ লোকে পাতিত্য ও পরলোকে নরক হয় না যেহেতু শুভকারী ব্যক্তির দুৰ্গতি কদাপি হয় না। সেই জ্ঞানভ্রষ্ট ব্যক্তি কৰ্ম্মীদের প্রাপ্য যে স্বৰ্গলোক সকল তাহাতে বহুকাল পৰ্য্যন্ত বাস করিয়া শুচি ধনবান ব্যক্তিদের গৃহে জন্ম লয় পরে ঐ জন্মেই পূৰ্বদেহাভ্যস্ত জ্ঞান প্ৰাপ্ত হইয়া তাহার দ্বারা মুক্তির প্রতি অধিক যত্ন করে । মনুঃ “সর্বেষামপি চৈতেষামাত্মজ্ঞানং পরং স্মৃতং। তদ্ধ্যগ্র্যং সৰ্ব্ববিদ্যানাং প্ৰাপ্যতে হ্যামৃতং ততঃ” ৷ এই সকল ধৰ্ম্মের মধ্যে আত্মজ্ঞানকে পরম ধৰ্ম্ম কহা যায় যেহেতু সকল [১০] ধৰ্ম্মের শ্ৰেষ্ঠ যে আত্মজ্ঞান তাহা হইতে মুক্তি হয়। অন্যের সংসৰ্গাধীন জ্ঞানাৰলম্বনের নিমিত্তে যত্ন করিলে তাহাকে গড়ডরিকাবলিকার ন্যায় লিখিয়াছেন। অতএব ইহার প্রয়োগস্থান বিবেচনা করা কীৰ্ত্তব্য যেমন অগ্রগামী মেষ দেখিয়া পশ্চাতের মেষ ভদ্রাভদ্ৰ বিচার না করিয়া তাহার অনুগামী হয় সেইরূপ যুক্তি ও শাস্ত্র বিবেচনা না করিয়া পুর্ব ২ ব্যক্তির ধৰ্ম্ম ও ব্যবহার অনুষ্ঠান যদি কোন ব্যক্তি করে তবে তাহার প্রতি ঐ গড়ুডরিকা প্ৰবাহ শব্দের প্রয়োগ পণ্ডিতেরা করিয়া থাকেন। কিন্তু এ স্থলে দুই