পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামমোহন-গ্ৰন্থাবলী سواS S “কৰ্ম্ম ব্যতিরেকে জ্ঞান হইতে পারে না।” এ কথনের দ্বারা যদি ধৰ্ম্মসংহারকের এমত অভিপ্রেত হয় যে ইহ জন্মের কিম্বা পুৰ্ব্বজন্মের কৰ্ম্ম বিনা জ্ঞান হয় না, তবে ইহা শাস্ত্রসিদ্ধ বটে। যেহেতু বেদান্তের তৃতীয় অধ্যায়ের ১ পাদের ৫ ১ সূত্র ( যাহার বিবরণ এই উত্তরের ৬৬ পৃষ্ঠের ২ পংক্তিতে করিয়াছি) এই অর্থকে প্ৰতিপন্ন করেন। এবং ইহাতে শ্রুতি প্ৰমাণ দিয়াছেন, যথা (গৰ্ত্তস্থ এব বামদেবঃ প্ৰতিপেদে ব্ৰহ্মভাবং) গৰ্ত্তস্থ যে বামদেব তিনি ব্ৰহ্মভাব প্ৰাপ্ত হইয়াছিলেন । অর্থাৎ তাহার ঐহিক কোন কৰ্ম্ম সম্ভাবিতে পারে না। সুতরাং জন্মান্তরের সাধন দ্বারা তাহার ব্ৰহ্মভাব হইয়াছে। ভগবদগীতাও ইহা পুনঃ২ দৃঢ় করিয়া প্ৰতিপন্ন করিয়াছেন তাহার কিঞ্চিৎ আমরা ওই ৬৬ পৃষ্ঠ অবধি লিখিয়াছি কৰ্ম্মকৰ্ত্তব্যতার বিষয়ৈ গীতার যে সকল বচন লিখিয়াছেন তাহার বিষয় কোন ২ ব্যক্তি হয়েন ইহার প্রভেদ জানা আবশ্যক, গীতাতে কোন স্থলে কৰ্ম্ম করিবার নিমিত্তে প্রেরণ করেন যথা ( এতান্যপি তু কৰ্ম্মাণি সঙ্গং ত্যক্ত ফলানি চ।। কৰ্ত্তব্যানীতি মে পার্থ নিশ্চিতং মতমুত্তমং ) এই সকল কৰ্ম্ম আসক্তি ও ফলকামনা পরিত্যাগপূর্বক কৰ্ত্তব্য হয় হে অৰ্জ্জুন। এ নিশ্চিত উত্তম মত আমার জানিবে। এবং কোন স্থানে কৰ্ম্ম ত্যাগের উপদেশ দেন ও সেই ত্যাগ নিমিত্ত পাপ হইলে পরমেশ্বরের শরণবলে তাহার মোচন হয়। এমত লিখেন, যথা ( সৰ্ব্বধৰ্ম্মান পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্ৰজ | অহং ত্বাং সৰ্ব্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচ: ) অর্থাৎ সকল কৰ্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া আমি যে এক আমার শরণাপন্ন হও, বর্ণাশ্রমাচারের ত্যাগজন্য যে পাপ তোমার হইবেক তাহা হইতে আমি তোমাকে মোচন করিব শোক করিও না । এবং কোন স্থানে গীতাতে লিখেন যে ব্যক্তিবিশেষের কৰ্ম্মত্যাগজন্য পাপ স্পর্শে না এবং তাহার বাঞ্ছিত ফলোৎপত্তিতে অন্য কোন বস্তুর অপেক্ষা নাই, যথা ( নৈব তস্য কৃতেনার্থে নাকৃতেনেহ কশ্চন । ন চাস্য সর্বভুতেষু কশ্চিদৰ্থব্যপাশ্ৰয়: ) সেই জ্ঞানীর কৰ্ম্ম করিলে পুণ্য হয় না এবং কৰ্ম্ম না করিলেও পাপ হয় না, আব্ৰহ্ম কীট পৰ্য্যন্ত তাবৎ জগতে তাহার মোক্ষপ্ৰাপ্তি বিষয়ে জ্ঞান ব্যতিরেকে অন্য কোনো উপায় আশ্রয়ণীয় হয় না ৷ অতএব এই সকল বচনের ঐক্য নিমিত্তে কোন অধিকারে বর্ণাশ্রমাচার কৰ্ম্মের আবশ্যকতা এবং কোন অধিকারে অনাবশ্যকতা ইহার বিশেষ জ্ঞানের সর্বথা অপেক্ষা করে, নতুবা বচন সকলের পূর্বাপর অনৈক্য হইয়া অপ্ৰমাণ্যের আশঙ্কা হয়। বেদান্তের তৃতীয় অধ্যায়ে চতুর্থ পাদে অধিকারের বিশেষ বিবরণ করিয়াছেন, তাহার প্রথম সূত্র (পুরুষার্থোতঃশব্দাদিতি বাদরায়ণঃ) বেদান্তবিহিত আত্মজ্ঞান হইতে পুরুষাৰ্থ , সিদ্ধ হয়, বেদব্যাসের এই মত যেহেতু বেদে ইহা কহিয়াছেন, শ্রুতিঃ (তিরতি