পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ხ8 রামমোহন—গ্রন্থাবলী হয় না, কি জানি, কে দেখিয়াছে, পরমেশ্বরই জানেন, কিন্তু অনেকেই জবানান্নভোক্তা বলিয়া মহাপুরুষকে নিন্দা করিয়া থাকেন, লোকপরম্পরা শুনিতে পাই, ন হ্যামূলা জনশ্রুতি, বহু জনের বাক্য প্ৰায়ঃ অমূল হয় না, সুবোধ লোকেরাই বিবেচনা করিবেন। যে ব্যক্তি বাল্য অবধি অহোরাত্র জীবনমাত্রের সহিত আলাপ পরিচয় একাসনে সহবাস ও অন্য২ তাবিদ্ব্যবহার করিতেছেন, তেঁহ সুতরাং আত্মবন্মান্যতে জগৎ ইহার ন্যায় অন্য ব্যক্তিকেও জীবনজান করিতে পারেন, সে যাহা হউক, তাহার এইরূপ জবনজ্ঞানে পরমাপ্যায়িত হইলাম, বুঝিলাম যে, ভাক্ততত্ত্বজ্ঞানী পণ্ডিতাভিমানীর বহু কালে বহু পরিশ্রমে এক্ষণে ভাক্ততত্ত্বজ্ঞানের ফল সম্পূর্ণ হইবার উপক্রম হইতেছে, ভাল ভাল, ঈশ্বর মঙ্গল করুন, ক্ৰমে সৰ্ব্বত্রই জবনজ্ঞান হুইবেক, যেমন যথার্থ তত্ত্ব[৩০]ঞানের ফল, ব্ৰহ্মমাত্রে তদগতমানসপ্ৰযুক্ত ব্ৰহ্মজ্ঞানী ব্ৰহ্মাণ্ডই ব্ৰহ্মময় দর্শন করেন, এবং আপনিও ব্ৰহ্মস্বরূপত্ব প্ৰাপ্ত হয়েন, তেমন ভাক্ততত্ত্বজ্ঞানের ফল, জীবনমাত্রে তদগতচিত্ততাপ্ৰযুক্ত ভাক্ততত্ত্বজ্ঞানী, ব্ৰহ্মাণ্ডই জীবনময় দর্শন করেন এবং আপনিও জীবন জাতি প্ৰাপ্ত হয়েন, যে নিতান্ত তদগতচিত্ত হয়, সে স্বপ্নেও তাহাকেই দর্শন করে এবং এক ক্ষুদ্র কীটবিশেষ, অন্য এক ক্ষুদ্র কীটবিশেষে তদগতচিত্ত হইয়া তৎকীটজাতি প্ৰাপ্ত হয়, ইহা শ্ৰীমদ্ভাগবতে ও লোকেও দৃষ্ট হইতেছে, অতএব মৃত্যুকালে ভগবদগীতাও কহিতেছেন। যথা। অন্তকালে চ মামেব স্মরন মুক্ত কলেবরং । যঃ প্রয়াতি স মদ্ভাবং যাতি নাস্ত্যত্র সংশয়: ॥ যং যং বাপি স্মরন ভাবং ত্যজিত্যন্তে কলেবরং । তং তমেবৈতি কৌন্তেয় সদা তদ্ভাবভাবিত: । তস্মাৎ সৰ্ব্বেষু কালেষু মামনুস্মর যুধ্য চা। ময্যৰ্পিতমনোবুদ্ধির্মামেবৈষ্য।[৩১]যন্তসংশয়ং ৷ অৰ্থাৎ হে অৰ্জ্জুন, অন্তকালে যে জীব কেবল আমাকে স্মরণ করতঃ দেহত্যাগ করে, সে মদ্ভাব প্ৰাপ্ত হয়, ইহা নিশ্চয় । যে২ ভাব স্মরণ করতঃ জীব অন্তকালে শরীর ত্যাগ করে সর্বদা সেই ভাবে ভাবিত হইয়া সেই ভাব প্রাপ্ত হয়। অতএব তুমি সকল কালে আমাকে স্মরণ কর ও যুদ্ধও কর, যে আমাতে মনঃ ও বুদ্ধি সমৰ্পণ করে, সে নিশ্চয় আমাকেই পায়। যথার্থ তত্ত্বজ্ঞানীর যে ব্ৰহ্মস্বরূপত্বপ্রাপ্তি ও ব্ৰহ্মাণ্ডকে ব্ৰহ্মময় দর্শন, তাহার শ্রুতিপ্ৰমাণ নগরাস্তবাসীর পুণ্যপ্ৰতাপে সম্প্রতি স্নেচ্ছেরাও বিশিষ্ট বৈশিষ্ট্যরূপে জ্ঞাত আছেন, পণ্ডিতাভিমানীর ন্যায় ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাজমীদিগের এরূপ বাঞ্ছা নাই যে, আমি অনেক শ্রুতি জানি এই প্রকারে সর্বসাধারণ লোকের নিকটে আপনার নাম প্ৰকাশ কিরূপে হইবেক, সামান্য জাতির নিকটে অগত্যা মম্বাদিবচন প্ৰকাশ কারণেই ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাজমীরা যে প্ৰকার কুষ্ঠি[৩২]ত ও দুঃখিত আছেন, তাহা কি কহিতে পারেন। বিষয় ব্যাপারের নিমিত্ত জাবনিকাদি বিদ্যাভ্যাস, তত্তজাতি ব্যতিরেকে তাহা কিরূপে হইতে পারে। ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাজকীদিগের সর্বজনগোচর সমাচার পত্রে মম্বাদিবচনসহিত প্রশ্নচতুষ্টয় প্রকাশ করণ, পণ্ডিতাভিমানীৱ বেদান্ত প্ৰকাশের ন্যায় মেচ্ছদিগের বোধার্থী নহে, কিন্তু সকলের অনর্থের মূলীভুত ব্যক্তিবিশেষকে জ্ঞাত হইয়া সকলের তৎসংসৰ্গ পরিত্যাগার্থ ও জগতের মঙ্গলার্থ তাহা ক্ৰমে হইতেছে ও হইবেক, তবে যে, স্নেচ্ছের বোধে উদ্দেশ্যতার অভাবেও পাপের আশঙ্কা, সে অবোধ মাত্র, মহাপুণ্যজনক কৰ্ম্মেও কি অল্প দোষ ক্ষতিকর হয়। এবং জাবনিক বিদ্যা অভ্যাস