পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাষণ্ডপীড়ন (S অতএব ব্ৰাহ্মণের বৈধ হিংসাও করিবেন না, যেহেতু তাহারা সাত্ত্বিক, এ স্থানে কোন নিপুণমতি কহেন যে, ব্ৰহ্মজ্ঞানীর সর্বশাস্ত্ৰেই অহিংসা দর্শনে এবং ব্ৰাহ্মণ জাতির শাস্ত্রাস্তরে বৈধ হিংসার বিধি শ্রবণে এই বচনে ব্ৰাহ্মণ শব্দে ব্ৰাহ্মণ জাতি নহে, কিন্তু ব্ৰহ্মকে জানেন, এই বুৎপত্তির অনুসারে ব্ৰাহ্মণ শব্দে ব্ৰহ্মজ্ঞানী, এই অর্থ সুতরাং বক্তব্য হয়। মহাকালসংহিতা । বানপ্রস্থে ব্ৰহ্মচারী গৃহস্থো বা দয়াপরঃ । সাত্ত্বিকে ব্ৰহ্মনিষ্ঠাশ্চ যশ্চ হিংসাবিবৰ্জিত: || তে ন দদুঃ পশুবলিমনুকল্পং চর্যন্ত্যপি । অর্থাৎ বানপ্ৰস্থ, ব্ৰহ্মচারী [ ১৩৯ ] আর नग्नावान् श्रृंश्श्, এবং সাত্ত্বিক, ব্রহ্মনিষ্ঠ ও হিংসাবজিত ব্যক্তি, এহারা পশুবলিদান করিবেন না, কিন্তু যে স্থানে বলিদানের আবশ্যকতা হয়, সে স্থানে অনুকল্পের আচরণ করিবেন। এই সকল শাস্ত্রের উল্লঙ্ঘনপূর্বক এক জীব, অপর জীবের জীবন, এই ঔদরিকদিগের সম্মত শাস্ত্রে নির্ভর করিয়া যাহারা উদরদরী সম্ভারণার্থ পশুছেদন করেন, সে ঔদরিক পাপিষ্ঠদিগের প্রতি পদ্মপুরাণ ও ব্ৰহ্মবৈবৰ্ত্তপুরাণ কহিতেছেন। পদ্মপুরাণে উত্তরখণ্ডং । ভূতানি যেসূত্র হিংসান্তি জলস্থলচর্যাণি চ । জীবনাৰ্থং হি তে যান্তি কালসূত্রগতিং নৱা: ৷ মাংসস্য ভোজনাত্তাত্র পূয়শোণিতপায়িনঃ। মজ্জন্তশ্চাবশা; পন্ধে দষ্টা: কীটৈরধোমুখা: ৷ অৰ্থাৎ এই মর্ত্যলোকে যাহারা অজ্ঞান অল্পবল জলচর কিম্বা স্থলচর যে কোন পশুকে মদমত্ত বলদীপিত হইয়া আত্মপুষ্টির নিমিত্ত বধ করে, সে ব্যাধের কালসুত্ৰগতি পায় অর্থাৎ নরকা ১৪০ ]ন্তে জন্ম, মরণান্তে নরক, এইরূপে পুনঃ পুনঃ সংসারেই ভ্ৰমণ করে, এবং সেই মাংসের ভোজনে পূয়শোণিতপায়ী হয় অর্থাৎ পূজা ও রক্তের পান করে এবং তাহারা অবশ্য ও অধোমুখ হইয়া মহাপঙ্কে মগ্ন হয়, কীটের সর্বদা দংশন করে। ব্ৰহ্মবৈবর্তে প্ৰকৃতিখণ্ডং । লোভাৎ স্বভক্ষণার্থায় জীবিনং হন্তি যো নরঃ। মজ্জাকুণ্ডে বসেৎ, সোপি তত্তোজী লক্ষবৎসরং । অর্থাৎ যে পাপিষ্ঠ জীব লোভপ্ৰযুক্ত আত্মভক্ষণার্থ অন্য জীবকে বধ করে, তাহার ও তন্তোজীর মজকুণ্ডে লক্ষ বৎসর। পৰ্য্যন্ত বাস হয়। এবং ভাক্ততত্ত্বজ্ঞানী মহাশয় কহেন যে, ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাজক্ষীরা পরমেশ্বরকে চৌৰ্য্য পারদাৰ্য্য দোষের অপবাদ দিয়া থাকেন, এ অতি আশ্চৰ্য্য, কারণ, র্তাহারাই ভগবান আত্মারাম শ্ৰীকৃষ্ণচন্দ্রকে ব্ৰজগোপিকাদিগের দধিদুগ্ধনবনীতচাের, বসনতস্কর ও পারদরিক বলিয়া চিরকাল ব্যঙ্গ বিদ্রুপ উপহাস করিয়া আসিতেছেন, এক্ষণে বুঝি ধৰ্ম্মসং[ ১৪১ ]স্থাপনাকাঙ্ক্ষীদিগের প্রতি দোষোল্লেখের অন্য কোন উপায় দর্শন না করিয়া অগত্যা এই অপবাদ দিতেছেন, ভাল, এও অত্যন্ত আহলাদের বিষয়, বুঝিলাম যে, র্তাহারদিগের দুর্বোধি দূর হওনের উপক্রম হইতেছে, যেহেতু তাহারা পরমেশ্বর শ্ৰীকৃষ্ণচন্দ্রের চৌৰ্য্যপারদাৰ্য্যকে এক্ষণে অযথার্থবোধ করিতেছেন। এবং শ্ৰীভগবানের জনন ও মরণ কি প্রকারে অযথার্থ কহা যায়, যেহেতু ভগবদগীতায় শ্ৰীভগবানই কহিতেছেন। যথা । শ্ৰীভগবানুবাচ। বহুনি মে ব্যতীতানি জন্মানি তব চাৰ্জন। তান্তহং বেদ সৰ্বাণি ন ত্বং বেখ পর্যন্তপ | অর্থাৎ শ্ৰীভগবান কহিতেছেন, হে অৰ্জ্জুন, তোমার ও আমার বহু জন্ম গত হইয়াছে, কিন্তু তুমি মায়ার বশীভূত হইয়া পূর্ববৃত্তান্ত তাবৎ বিস্মৃত, আমি মায়ারহিত, এ কারণ আমার সকল স্মরণ হয়। এই শ্লোকে শ্ৰীভগবানের জন্ম বোধ