२88 রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র গ্রন্থখানি নিতান্ত ক্ষুদ্র নহে। তুলট কাগজে পুথির আকারে ২৪৪টি পত্র আছে ; প্রত্যেক পত্রের উভয় পুষ্ঠে লেখা। অধিকাংশ পয়ার ও ত্রিপদী ছন্দে বিরচিত। পয়ারের চল্লিশটি চরণ গড়ে প্রতি পৃষ্ঠে স্থান পাইয়াছে। গ্রন্থের শেষ ভাগে কবির পরিচয় এইরূপ দেওয়া আছে ;— গৌড় দেশ মধ্যে বাস গঙ্গার দক্ষিণে । কান্তকুজ বিপ্ৰ হই ত্ৰিবেদী আখ্যানে ॥ পিতৃ পূৰ্ব্ব স্থান নদী সরযু উত্তরে এ দেশে পৈতৃক বাস আমাড়ি নগরে ॥ বিখ্যাত ভুবনে নাম পোকরে আলয় । ভণে পৃথ্বীচন্দ্র বৈদ্যনাথের তনয় । গৌড় দেশ রাঢ়ভূমি পৰ্ব্বত সমীপ । গঙ্গার দক্ষিণ কূলে রাজ্যের অধিপ। আমাড়ি পরগণা নাম পোকর অলিয়। ভণে পৃথু চন্দ্র বৈদ্যনাথের তনয় ॥ পুস্তক রচনার তারিখ বার শত তের সাল,— সতের শ আটাইশ শকে, রচিলাম এ পুস্তকে, বার শত ত্রয়োদশ সন । গৌরীমঙ্গলের গীত, শ্রবণে ভক্তের প্রত ভবভয় উদ্বার কারণ ॥ আমাড়ি পরগণার অন্তর্গত পোকর, ঈষ্ট ইণ্ডিয়া রেলওয়ে লুপলাইনের পাকুড ষ্টেসন হইতে অভিন্ন। গ্রন্থকার পাকুড়ের রাজা বৈদ্যনাথ ত্রিবেদীর পুত্র রাজা পৃথ্বীচন্দ্র ত্রিবেদী। রাজা পৃথ্বীচন্দ্র পাকুড়ের বর্তমান রাজা শ্ৰীযুক্ত সীতেশচন্দ্র পাড়ে বাহাদুরের প্রমাতামহ। গ্রন্থখানি নব্বই বৎসর মাত্র পূৰ্ব্বে রচিত হইলেও বিষয়, ভাব ও ভাষার বিচারে প্রাচীন বাঙ্গালা সাহিত্যের অন্তর্গত। পাকুড়ের রাজবাটীতে বা অন্যত্র এ গ্রন্থের প্রতিলিপি বর্তমান আছে কি না, জানি না। জেমেরি রাজবাটীর পুথিখানির নকল ১৭৫১ শকে ( ১২৩৬ সালে ) ১৭শে মাঘ তারিখে শেষ হয়, এইরূপ লিখিত আছে। গ্রন্থরচনার তেইশ বৎসর পরে নকল ; স্বতরাং মূল গ্রন্থের সহিত পাঠভেদের অধিক সম্ভাবনা নাই। শুনিলাম, জেমোর রাজা লক্ষ্মীনারায়ণ রায় ( প্রবন্ধলেখকের প্রপিতামহীর পিতা ) পাকুড়ের রাজা পৃথ্ব চন্ধের সহিত সৌহাৰ্দবদ্ধ ছিলেন। সম্ভবতঃ সেই স্থত্রেই এখানে এই পুথির আবির্ভাব। ১২৩৯ সালে লক্ষ্মীনারায়ণের পরলোক হয়। তাহার জীবদ্দশাতেই পুথিখানি এখানে আসিয়া থাকিবে। গ্রন্থরচনার উন্ধেগু এইরূপ বৰ্ণিত হইয়াছে ;– সত্যযুগে বেদ অর্থ জানি মুনিগণ । তে কারণে মুনিগণে পুরাণ করিল। সেইমত চালাইল সংসারের জন । অনেক পুরাণ উপপুরাণ হইল। vত্রেতাযুগে বেদ অর্থ জানিতে নারিল। দ্বাপরে মনুষ্যগণে ধারণে নারিল ॥.