পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা : সামাজিক ব্যাধি ও তাহার প্রতিকার 2 "ללא পেয়াদাত্ব গ্রহণ করিয়া নানা কৌশলে অর্থোপার্জনে ব্যুৎপত্তি লাভ করে, ইহা নিতান্ত মন্দ নহে। কিন্তু ভদ্র গৃহস্থের ছেলেকে ইংরাজী পড়াইতে হয়। এনট্রান্স পাস করিলে দূরদেশ কলেজে পাঠাইতে হয়। সেখানে কলেজের বেতন ও পুস্তকাদির হিসাবে যে খরচ পড়ে, থিয়েটারের পয়সা যোগাইতে তার তিনগুণ পড়িয়া যায়। এত প্রয়াসের ফলে র্যাহারা উপাধিভূষিত হইয়া বাহির হয়েন, র্তাহাদের চারপাশের ও সামলার মূল্যও সহজে আদায় হয় না । বিবাহ উপলক্ষ্যে কিঞ্চিৎ অর্থাগমের আশা থাকিলেও অন্ধ বিধাতা সকলকে কেবল পুত্ররত্নে সৌভাগ্যশালী করেন নাই। এইরূপ সর্বত্র । কি ধনী, কি দরিদ্র, সকলেরই ব্যয়ের অঙ্ক অত্যন্ত বাড়িয়া গিয়াছে । বিলাতী সভ্যতা যেখানে যে পরিমাণে প্রবেশ করিয়াছে, সেখানে সেই পরিমাণেই ব্যয়বাহুল্য হইয়াছে। আমাদের আয় বাডিয়া থাকিলেও সঙ্গে সঙ্গে যদি ব্যয়ও সেই অনুপাতে বাড়িয়া থাকে, তাহা হইলে আমাদের অবস্থার তেমন সুবিধা হইল কোথায় ? অন্ততঃ আয় ব্যয়ের হিসাব করিতে গিয়া কোনটা কত বাডিয়াছে, তাহা না জানিলে আমাদের অবস্থা কিরূপ, তাত নির্ণয় হইবে কিরূপে ? সরকারী ও বেসরকারী উভয় পক্ষ কেবল আয়ের অঙ্ক বা ব্যযের অঙ্ক লইয়া আলোচনা করেন, উভয় দিকৃ খতাইয়৷ দেখিলে এতদিন একটা মীমাংস বোধ করি স্থির হইয়া যাইত। অথচ মীমাংসা এত কাল হইল না। ওয়েডারবর্ণ ও দাদাভাই নৌরজী ভারত বর্ষ দেউলিয়া হইল বলিয়া ক্রমাগত ষ্টেট, সেক্রেটারির কর্ণজালার উৎপাদন করিতেছেন ; ষ্টেট, সেক্রেটারি ক্রমাগত জবাব পাঠাইতেছেন—আমরা তোমাদিগকে ক্রমেই উত্তর দিকৃ পানের দরজার নিকট লইয়া যাইতেছি। আমাদের পক্ষে এরূপ স্থলে তুষ্ণীভাবই বিধি । র্যাহারা আমাদের ব্যয়বৃদ্ধি ও বিলাসিত বৃদ্ধি দেখিয়া আমাদের অবস্থার সচ্ছলতা অনুমান করেন, তাহাদের সেই অনুমানের যাথার্থ্যে একটু সন্দেহ উপস্থিত হয়। অবশু অবস্থা ভাল না হইলে বিলাসের দিকে, খরচের দিকে,অনাবশ্যক অপব্যয়ের দিকে মানুষের মন যায় না, ইহাই সাধারণ নিয়ম ; এবং যে স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া বিলাসের উপকরণ আহরণ করে, তাহার অবস্থার সচ্ছলতা স্বভাবতঃই অনুমেয়। ইহা স্বভাবেরই নিয়ম ; মানুষ কিছু পেটে না খাইয়া বাবুয়ানার ভড়ং করে না। কিন্তু এই স্বাভাবিক নিয়মের কি কোথাও ব্যাভিচার নাই ? বুদ্ধিদোষে, সঙ্গদোষে, কৰ্ম্মবিপাকে, প্রকৃতির তাড়নায় মনুষ্য কি কখনও এই স্বাভাবিক নিয়ম হইতে ভ্ৰষ্ট হয় না ? কুবেরপুত্রও আপনার অস্বাভাবিক প্রকৃতির তাড়নায় পৈতৃক ঐশ্বৰ্য্য নষ্ট করিয়া ভিক্ষাবৃত্তির অবলম্বনে বাধ্য হয়। ব্যক্তি পক্ষে যাহা ঘটতে পারে, ব্যক্তিসমষ্টি বা সমাজ পক্ষে তা ঘটা কি একেবারে অসম্ভব ? সমাজচক্র কি বৰ্ত্তমান কালে ঠিক স্বাভাবিক নিয়মেই চালিত হইতেছে ? আমাদের সমাজে স্বাধন চিন্তা, স্বাধীন ইচ্ছ, স্বাধীন বাণিজ্য প্রভৃতি শ্রবণনিনাদী শব্দসমূহ কি ঠিক অভিধান প্রচলিত অর্থেই ব্যবহৃত হয় ? ইহা ভাবিবার বিষয় ও আলোচনার বিষয় । আমরা বর্তমান কালে যে সৰ্ব্বাঙ্গীণ শান্তি ও আরাম উপভোগ করিতেছি, সেই অবস্থা কি মচুন্যসমাজের পক্ষে স্বাভাবিক অবস্থা হইতে পারে ? আমাদের প্রভু জাতি মহামহিম, মহৈশ্বৰ্য্যশালী, মহাজ্ঞান, মহানুভাব, মহাশয়। কিন্তু আমরা তাহাদের ছুলনায় সৰ্ব্বাংশেই ক্ষুদ্র । এবং বৃহত্বের সান্নিধ্য ফুত্রের স্বাভাবিক ক্ষুন্নত্বকে কি মারও शू!-२€