পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
রূপসী বোম্বেটে

পীড়াপীড়ি আরম্ভ করিয়াছে; কামান বন্দুকগুলিও পুরাতন হইয়া গিয়াছে, শীঘ্রই কিছু নূতন অস্ত্র আমদানি করিতে হইবে। সাণ্টা-রোজা পর্য্যন্ত রেলের লাইনটুকু খুলিতে না পারিলে চলিতেছে না; আর প্রাসাদের কোন কোন অংশের পরিবর্ত্তন পরিবর্দ্ধনও নিতান্ত আবশ্যক। এইবার আমাকেও কিছু সম্বল ফরিয়া লইতে হইবে ও দুই কোটী টাকা এক সঙ্গে কখনও হাতে আসে নাই।”

 বস্তুতঃ এতগুলি টাকা হস্তগত হওয়ায় প্রেসিডেণ্ট পিয়ারসনের মনে আনন্দ-সঞ্চারের যথেষ্টই কারণ ছিল। পাঁচ বৎসর পূর্ব্বে যখন তিনি একাকী সাল্‌ভেরিটায় পদার্পণ করেন, তখন তিনি তেমন ধনবান ছিলেন না, কাহাও সহিত তাঁহার বিশেষ পরিচয়ও ছিল না। তাহার পর এই পাঁচ বৎসরে তাঁহার কি পরিবর্তন! এখন তিনি সাল্‌ভেরিটার নির্ব্বাচিত নরপতি; প্রজাতন্ত্রের ভাগ্য-নিয়ন্তা! প্রজা-বিপ্লবে তিনি ভূস্বামীগণের পক্ষে যোগদান না করিলে, এত শীঘ্র তিনি রাজ্যের সর্ব্বেসর্ব্বা হইতে পারিতেন না। এখন ধন মান, যশ, প্রভূত্ব সকলই তিনি লাভ করিয়াছেন। অষ্ট্রেলিয়ার একটা সোনার খনির ডাইরেক্টর আজ সাল্‌ভেরিটা রাজ্যের অধিনায়ক। অদ্ভুত ভাগ্য!

 সাল্‌ভেরিটা রাজ্যের সৈন্যগণই তাঁহার প্রধান সহায়। তিনি অপূর্ব্ব কৌশলে বহু চেষ্টায় সৈন্যগণকে তাঁহার পক্ষাবলম্বী করিয়া, ছিলেন।—সেনাপতির মৃত্যুর পর সর্ব্ব-সম্মতিক্রমে তিনিই প্রধান। সেনানায়কের পদ লাভ করেন;—সেই পদ হইতে প্রেসিডেণ্টের পদ লাভ করা তাঁহার পক্ষে কঠিন হয় নাই।

 'জিগ্‌স’ খনির মালেকান স্বত্ত্ব কৌশলে আত্মসাৎ করিয়া মিসেস্‌ কার্টারের বিশ্বাসঘাতক কর্মচারীরা প্রচুর সুবর্ণ লাভ করিয়াছিল;কিন্তু'পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায়', এ কথা মিথ্যা নহে পিয়ারসন।