পাতা:লঘুগুরু প্রবন্ধাবলী - রাজশেখর বসু.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০২
লঘুগুরু

বৈদেশিকের সহিত প্রাচীন হিন্দুর আদান প্রদান চলিয়াছিল, তাহাদের নিকট হইতেও সংস্কৃত ভাষা ঋণস্বীকারে কাতর হয় নাই।•••আমাদের পক্ষে সেইরূপ ঋণগ্রহণে লজ্জা দেখাইলে কেবল অহম্মুখতাই প্রকাশ পাইবে।’ (সাহিত্যপরিষৎপত্রিকা, সন ১৩০১)

 বাংলা ভাষার জননী সংস্কৃত হতে পারেন, কিন্তু গ্রীক ফারসী আরবী পাের্তুগিজ ইংরেজীও আমাদের ভাষাকে স্তন্যদানে পুষ্ট করেছে। যদি প্রয়ােজনসিদ্ধির জন্য সাবধানে নির্বাচন করে আরও বিদেশী শব্দ আমরা গ্রহণ করি, তবে মাতৃভাষার পরিপুষ্টি হবে, বিকার হবে না। অপ্রয়ােজনে আহার করলে অজীর্ণ হয়, প্রয়ােজনে হয় না। যদি বলি―‘ওয়াইফের টেম্পারটা বড়ই ফ্রেটফুল হয়েছে’, তবে ভাষাজননী ব্যাকুল হবেন। যদি বলি—‘মােটরের ম্যাগ্‌নেটোটা বেশ ফিনকি দিচ্ছে’, তবে আমাদের আহরণের শক্তি দেখে ভাষাজননী নিশ্চিন্ত হবেন।

 ইউরােপ আমেরিকায় যে International Scientific Nomenclature সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে তার দ্বারা জগতের পণ্ডিতমণ্ডলী অনায়াসে জ্ঞানের আদানপ্রদান করতে পারছেন। এই পরিভাষা একবারে বর্জন করলে আমাদের ‘অহম্মুখতা’ই প্রকাশ পাবে। সমস্ত না হােক, অনেকটা আমরা নিতে পারি। যে বৈদেশিক শব্দ নেওয়া হবে, তার বাংলা বানান মূলানুযায়ী করাই উচিত। বিকৃত ক'রে