পাতা:লুকোচুরি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
দারোগার দপ্তর, ১৯৬ সংখ্যা।




আমারও এত কৌতূহল জন্মিয়াছিল যে, আমিও তাহার সহিত তাহার খুড়ীমার নিকট গমন করিলাম, কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, বৃদ্ধা যখনই ঐ কাগজের দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন, তখনই তাঁহার মুখ পাংশুবর্ণ ধারণ করিল। তাঁহার মলিন মুখ দেখিয়া আমার বোধ হইল, তিনি অত্যন্ত ভীত হইয়াছেন। এত মনোযোগের সহিত তিনি কাগজখানি দেখিতেছিলেন যে, আমি সাহস করিয়া সে সময়ে তাঁহাকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করিতে পারিলাম না। কিছুক্ষণ পরে বৃদ্ধা কিয়ৎ পরিমাণে সুস্থ হইলেন। আমি তখন তাঁহার ভয়ের কারণ জিজ্ঞাসা করিলাম।

 এই বলিয়া অনাথনাথ নিস্তব্ধ হইলেন। তাঁহার বাহ্যিক ভাব দেখিয়া বুঝিলাম, তিনিও ভীত হইয়াছেন। তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “তিনি কি বলিলেন?”

 অ। তিনি যাহা বলিলেন, তাহা অতি ভয়ানক। শুনিলে হৃদকম্প উপস্থিত হয়। তিনি বলিলেন, আমার শ্বশুর মহাশয় বর্দ্ধমান জেলায় চাষবাস করিতেন। তাঁহার অধীনে প্রায় সহস্র বিঘা জমী ছিল, অনেক লোকজন তাঁহার বাড়ীতে প্রতিপালিত হইত। তাঁহার আয়ও যথেষ্ট ছিল। তাঁহার দোর্দণ্ড প্রতাপে স্বয়ং জমীদার পর্য্যন্ত ভীত হইতেন। কিন্তু সহসা একদিন সেই সমস্ত ত্যাগ করিয়া আমার স্ত্রী ও আর দুইটী পুত্রের সহিত কলিকাতায় চলিয়া আইসেন।

 আ। আপনার শ্যালক দুইজন কি এখন জীবিত আছেন?

 অ। আজ্ঞে না—তাহাদিগকে কলিকাতার এই বাড়ীতে রাখিয়া শ্বশুর মহাশয় কেবল বিমলাকে লইয়া স্বতন্ত্র একটী বাড়ী ভাড়া করেন এবং কমিশরিয়েটে একটী চাকরি যোগাড় করিয়া