পাতা:লুকোচুরি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
দারোগার দপ্তর, ১৯৬ সংখ্যা

কখন তাঁহার সহিত তীর্থেও যাই, কিন্তু সর্ব্বদাই সাবধানে থাকিতে হয়।

 আ। আপনি মারা গিয়াছেন বলিয়া সহরময় রাষ্ট্র করিলেন কেন?

 বৃ। নতুবা দস্যুগণের হাত হইতে নিষ্কৃতি পাই না। আমার কয়েকজন বন্ধুই ষড়যন্ত্র করিয়া একার্য্য সম্পন্ন করিয়াছিল। তাঁহারা এ কার্য্যের ভার না লইলে আমি কখনও পলাইতে পারিতাম না। তাঁহারা অগ্রে আমাকে রেলগাড়ীতে তুলিয়া দিলেন। পরে সেই দিন রাত্রেই একটা মিথ্যা জনরব রাষ্ট্র করিলেন, আমি মারা গিয়াছি। ক্রমে সেখানকার সকলেই আমার মৃত্যুসংবাদ জানিতে পারিল। বিমলার ক্রন্দনে এবং আমার সমস্ত বিষয় আশয় বিক্রয় হওয়াতেই সকলেই সে মৃত্যু-সংবাদ বিশ্বাস করিল; কাহারও অণুমাত্র সন্দেহ হইল না।

 প্রায় একমাস হইল সহসা একদিন ইচ্ছা হইল, যখন আমি জীবিত আছি, তখন বিমলাকে পত্র লিখিয়া সমস্ত কথা জানাই। এই ভাবিয়া তাহাই করিলাম। কন্যা আমার সংবাদ পাইয়া আমার নিকট আসিবার কথা বলিল।

 বাধা দিয়া আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “পত্র দেখিয়াই বিমলা আপনাকে চিনিতে পারিল? তাহার এতদিনের বিশ্বাস একেবারে নষ্ট হইয়া গেল?”

 বৃদ্ধ হাসিলেন। তিনি বলিলেন, “আপনারা পুলিসের লোক, জেরা ভিন্ন কাজ করেন না। কিন্ত এখানে তাহা চলিবে না। আমার হাতের লেখা অতি অদ্ভূত, দেখিতে পার্‌সি অক্ষরের মত কিন্তু প্রকৃত বাঙ্গালা অক্ষর। বিমলা আমার হাতের লেখা বিশেষ