পাতা:লুকোচুরি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লুকোচুরি।
৪১

 অ। কিন্তু আপনি কেমন করিয়া জানিলেন যে, বিমলা পলায়ন করিতেছে।

 আ। সেদিন থানা হইতে ফিরিয়া যাইবার সময় যখন দ্বিতীয় পত্রখানি ঘাসের থলিয়ার ভিতর হইতে বাহির হয়, সেই দিন আমি স্বচক্ষে আপনার স্ত্রীর কার্য্য দেখিয়াছি।

 অ। কি?

 আ। পত্রখানি অগ্রে তিনি নিজেই সেই থলির ভিতর রাখিয়া দেন। কোচমান যখন ঘাস রাখিতে যায়, তখন বাহির করে। আমার কথা বিশ্বাস না হয় আপনার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করিতে পারেন।

 অনাথনাথকে আর জিজ্ঞাসা করিতে হইল না। বিমলা লজ্জা ত্যাগ করিয়া গললগ্নীকৃতবাসে আমার পদতলে আসিয়া পড়িলেন এবং সকল কথাই স্বীকার করিলেন। তাঁহার কথা শুনিয়া আমি বলিলাম, “অনাথ বাবু আপনাকে কোন কথা বলিবেন না, আপনার উপর কিছুতেই বিরক্ত হইবেন না, ঠিক পূর্ব্বের মতই সদ্ব্যবহার করিবেন। কিন্তু কেন আপনি এত চাতুরী করিলেন তাহা বলিতে হইবে।

 বিমলা অনেকক্ষণ কোন উত্তর করিলেন না। পরে আমার নির্ব্বন্ধাতিশয় দর্শনে বলিলেন, “আজ আপনি আমার পিতার স্বরূপ, আপনার নিকট কোন কথা গোপন করিব না। আমার স্বামী আমাকে অত্যন্ত ভালবাসেন, তাঁহার সেই ভালবাসা মৌখিক কি আন্তরিক তাহাই জানিবার জন্য আমি এত কাণ্ড করিয়াছি। আমার অপরাধ হইয়াছে—আমায় ক্ষমা করুন, আমি আর কখনও এমন কার্য্য করিব না।