পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫২
লেফটেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস

তাঁহার গত জীবনের সমস্ত কথা শুনিবার জযন্য কৌতূহল প্রকাশ করিতেন। তিনি মনোভাব গোপন করিবার চেষ্টা করিলেও সময় সময় পারিতেন না। তাঁহার বদনে তাঁহার চক্ষে তাঁহার মনের ভাব প্রতিফলিত হইত। সুরেশ যে ইহা একেবারে বুঝিতেন না, তাহা নহে,—তবে তিনি তাঁহার মনকে এ কথা বিশ্বাস করিতে দিতেন না। তিনি মন হইতে সর্ব্বদাই রমণীর মূর্তি অন্তর্হিত করিবার প্রয়াস পাইতে লাগিলেন; কিন্তু তিনি যতই চেষ্টা করেন, যতই হৃদয়কে দমন করিতে চাহিতেন, ততই হৃদরের বেগ বৃদ্ধি পাইতে লাগিল; তিনি কি করিবেন কিছুই স্থির করিতে পারিলেন না।

 তাঁহার বিবাহের অবস্থা নহে, তিনি এক্ষণে যাহা উপর্জ্জন করেন তাহাতে মেম বিবাহ করা চলে না। বিবাহ করিয়া তাহাকে কোথায় লইয়া যাইবেন? ইংরাজী হিসাবে এক্ষণে তাঁহার বিবাহের বয়স হয় নাই,—এখন বিবাহের ইচ্ছাকে তাহার হৃদয়ে কোনমতেই স্থান দেওয়া কর্তব্য নহে। এই সকল ভাবিয়া চিন্তিয়া তিনি হৃদয় হইতে তাহার প্রেম দূর করিবার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা পাইতে লাগিলেন, হৃদয়ের সহিত যুদ্ধ আরম্ভ করিলেন, হদয়ের ভাব হৃদয়ে লুক্কাইত করিবার জন্য সর্বদা চেষ্টিত রহিলেন, অথাচ সময় সময় যখন তিনি রমণীর সহিত একত্রে একাকী থাকিতেন, তখন ভাব ভঙ্গীতে তাঁহার মনের ভাব প্রকাশ হইয়া পড়িত অন্য কেহ তাঁহাদের মনোভাব জানিতে না পারিলেও তাঁহাদের দুই জনের মনের ভাব দুইজনে বুঝিতে বাকি থাকিত না। এইরূপে উভয়ে উভয়ের অজ্ঞাতসারে উভয়ের প্রতি আকৃষ্ট হইতেছিলেন।