পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবদ্বীপ ও নবদ্বীপবাসী।
১৩

“রাজ্যের উত্তরসীমা মুর্শিদাবাদ।
পশ্চিমের সীমা গঙ্গা ভাগিরথী খাদ॥
দক্ষিণের সীমা গঙ্গাসাগরের ধার।
পূর্ব্বসীমা ধূলাপুর বড়গঙ্গা পার॥”

 নবদ্বীপ বঙ্গের বিদ্যচর্চ্চার প্রধান স্থান। সুধু বিদ্যাচর্চ্চা বা শাস্ত্রালোচনা নহে—বিদ্যাদানের বিখ্যাত স্থান। পৃথিবীর আর কোন দেশে এরূপ বিদ্যাদান প্রথা ছিল বলিয়া ত বোধ হয় না। বিদ্যার্থী আসিলে তাহাকে নিরাশ হইয়া ফিরিতে হইত না। অধ্যাপক মণ্ডলী ধনাঢ্য ছিলেন না, কিন্তু আপনাদের আহার্য‍্যের অংশ হইতেও শিক্ষার্থীকে আহার করাইয়া শিক্ষাদান করিতেন এবং শিক্ষার্থীও পিতৃনির্বিশেষে অধ্যাপককে প্রীতিভক্তি করিতেন।

 নবদ্বীপের বিভব বিস্তারের কথা আলোচনা করিতে হইলেই এখানকার পাণ্ডিত্য প্রভাবের কথা আমাদের সর্ব্বাগ্রে মনে পড়ে। এই কামকলুষময় পৃথিবীর মধ্যে ভোগবিলাসিতা হইতে সম্পূর্ণ দূরে থাকিয়া জ্ঞানচর্চ্চা ও ঈশ্বরচিন্তায় চিত্ত সমর্পণ করিয়া নবদ্বীপের পণ্ডিত সমাজ অক্ষয়কীর্ত্তি রাখিয়া গিয়াছেন। পণ্ডিত রঘুনাথ বিদ্যাদানের জন্য ব্যাকুল হইয়া যখন বৃক্ষাদিকেই শাস্ত্র ব্যাখ্যা করিয়া শুনাইলেন, তখন তিনি মনে করেন নাই, সেই ব্যাকুলতার ফলে বঙ্গদেশ ন্যায়চর্চার প্রাধান্যের অমৃত ফল উপভোগ করিবে? আর মথুরানাথ, সেই পার্থিব সুখভোগস্পৃহাহীন শিক্ষাগুরুর আদর্শ কোথায়? বিদ্যাদান ও ছাত্রপালনই তাঁহার জীবনের এক মাত্র ব্রত। গৃহে অন্ন