૪૨ লোকরহস্য মহাপণ্ডিত তৎপক্ষে প্রবৃত্তিদায়ক গ্রন্থাদি লিখিতেছেন। তাহারা স্বজাতিহিতৈষী, সন্দেহ নাই। আমার বিবেচনায়, সম্মানবৰ্দ্ধনার্থ উাহাদিগকে এই ব্যাঘ্র-সমাজের অনরারি মেম্বর নিযুক্ত করিলে ভাল হয়। ভরসা করি, তাহারা সভাস্থ হইলে, আপনার তাহাদিগকে জলযোগ করিবেন না। কেন না, তাহারা আমাদিগের ন্যায় নীতিজ্ঞ এবং লোকহিতৈষী। মনুষ্যমধ্যে বিশেষ এক প্রকার নৈমিত্তিক বিবাহ প্রচলিত আছে, তাহাকে মোদ্রিক বিবাহ বলা যাইতে পারে। এ প্রকার বিবাহ সম্পন্নার্থ মানুষ মুদ্রার দ্বারা কোন মানুষীর করতল সংস্পৃষ্ট করে। তাহা হইলেই মৌদ্রিক বিবাহ সম্পন্ন হয়। মহাদংষ্ট্র। মুদ্রা কি ? বৃহন্নাঙ্গুল। মুত্র ম্যুদিগের পূজ্য দেবতাবিশেষ। যদি আপনাদিগের কৌতুহল থাকে, তবে আমি সবিশেষে সেই মহাদেবীর গুণ কীৰ্ত্তন করি। মমুন্য যত দেবতার পূজা করে, তন্মধ্যে ইহার প্রতিই তাহাদের বিশেষ ভক্তি। ইনি সাকার। স্বর্ণ, রৌপ্য এবং তামে ইহার প্রতিমা নিৰ্ম্মিত হয়। লৌহ, টিন এবং কাষ্ঠে ইহার মন্দির প্রস্তুত করে। রেশম, পশম, কাপাস, চৰ্ম্ম প্রভৃতিতে ইহার সিংহাসন রচিত হয়। মানুষগণ রাত্রিদিন ইহার ধ্যান করে, এবং কিসে ইহার দর্শন প্রাপ্ত হইবে, সেই জন্য সৰ্ব্বদা শশব্যস্ত হইয়া বেড়ায় । যে বাড়ীতে টাকা আছে জানে, অহরহ সেই বাড়ীতে মনুষ্যেরা যাতায়াত করিতে থাকে,—এমনই ভক্তি, কিছুতেই সে বাড়ী ছাড়ে ন-মারিলেও যায় না । যে এই দেবীর পুরোহিত, অথবা যাহার গৃহে ইনি অধিষ্ঠান করেন, সেই ব্যক্তি মনুষ্যমধ্যে প্রধান হয়। অস্ত মমুখেরা সৰ্ব্বদাই তাহার নিকট যুক্তকরে স্তব স্তুতি করিতে থাকে। যদি মুদ্রাদেবীর অধিকারী একবার তাহাদের প্রতি কটাক্ষ করে, তাহা হইলে তাহার চরিতার্থ ইয়েন । দেবতাও বড় জাগ্রত। এমন কাজই নাই যে, এই দেবীর অনুগ্রহে সম্পন্ন হয় না। পৃথিবীতে এমন সামগ্রীই নাই যে, এই দেবীর বরে পাওয়া যায় না। এমন যুদ্ধৰ্ম্মই নাই যে, এই দেবীর উপাসনায় সম্পন্ন হয় না। এমন দোষই নাই যে, ইহার অমুকম্পায় ঢাকা পড়ে না। এমন গুণই নাই যে, তাহার অনুগ্রহ ব্যতীত গুণ বলিয়া মনুষ্যসমাজে প্রতিপন্ন হইতে পারে ; যাহার ঘরে ইনি নাই—তাহার আবার গুণ কি ? যাহার ঘরে ইনি বিরাজ করেন, তাহার আবার দোষ কি ? মনুষ্যসমাজে মুদ্রামহাদেবীর অনুগৃহীত ব্যক্তিকেই ধাৰ্ম্মিক বলে—মুদ্রাহীনতাকেই অধৰ্ম্ম বলে। মুত্র থাকিলেই বিদ্বান হইল। মুদ্রা যাহার নাই, তাহার বিষ্ঠা থাকিলেও, মমুন্যশাস্ত্রানুসারে সে মূৰ্খ বলিয়।