শ্যামী। তবে বল।
রামী। চুত লতিকা নব মুকুলিত হইয়া—
শ্যামী। সই! এই বলিলে চুতলতা—আবার লতিকা হইল কেন?
রামী। আরও কিছু মিষ্ট হইল। চুত লতিকা নব মুকুলিত হইয়া চারি দিকে সৌগন্ধ বিকীর্ণ করিতেছে—
বামী। ভাই, আঁবের বোল যে বসন্তকালে চুঁইয়ে গিয়া কড়েয়া ধরে।
শ্যামী। বলিলে কি হয়, কেমন মিষ্ট হইল দেখ দেখি।
রামী। তাহাতে ভ্রমরগণ মধুলোভে উন্মত্ত হইয়া ঝঙ্কার করিতেছে, শুনিয়া আমাদিগের প্রাণ বাহির হইতেছে।
শ্যামী। আহা! সখি, সত্যই বলিয়াছ। সই, ভ্রমর কাকে বলে?
রামী। মর্ নেকি, তাও জানিস্নে। ভ্রমর বলে ভোম্রাকে।
শ্যামী। ভোম্রা কোন্গুলো ভাই?
কামী। ভোম্রা বলে ভিম্রুলকে।
শ্যামী। তা ভাই ভিম্রুল আঁবের বোল দেখে পাগল হয় কেন? ভিম্রুলের পাগলামি কেমনতর? ওরা কি আবোল তাবোল বকে?
রামী। কে বলেছে পাগল হয়?
শ্যামী। ঐ যে তুমি বলিলে “উন্মত্ত হইয়া ঝঙ্কার করিতেছে।”
রামী। কোন্ শালী আর তোদের কাছে বসন্ত বর্ণনা করিবে!
শ্যামী। ভাই, রাগ কর কেন? তুমি বেশী লেখা পড়া শিখেছ, আমি কম শিখেছি—আমায় বুঝাইয়া দিলেই ত হয়। সকলেই কি তোমার মত রসিকে?
রামী। (সাহঙ্কারে) আচ্ছা, তবে শোন্। ভ্রমরগণ মধুলোভে উন্মত্ত হইয়া ঝঙ্কার করিতেছে। তাহাদিগের গুণ্ গুণ্ রবে আমাদের প্রাণ বাহির হইতেছে।
শ্যামী। সই, ভোমরার ডাক “গুণ, গুণ” না “ভোঁ ভোঁ”?
রামী। কবিরা বলেন, “গুণ্ গুণ্।”
শ্যামী। তবে গুণ্ গুণ্ই বটে। তা উহাতে আমাদের প্রাণ বাহির হয় কেন? ভিম্রুল কামড়াইলে প্রাণ বাহির হয় জানি, কিন্তু ভিম্রুল ডাকিলেও কি মরিতে হইবে?
রামী। এ পর্য্যন্ত সকল বিরহিণীগণ গুণ্ গুণ্ রবে মরিয়া আসিতেছে, তুই কি পীর যে, মর্বি না?