পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
৫৯

তত্ত্বাবধান করিতে পারে। অনসূয়া কহিলেন, সধি! এ বৃত্তান্ত আমাদেরই মনে মনে থাকুক, কোনও মতে কর্ণান্তর করা হইবেক না; শকুন্তলা শুনিলে প্রাণে বাঁচিবেক না। প্রিয়ংবদা কহিলেন, সখি! তুমি কি পাগল হয়েছ? এ কথাও কি শকুন্তলাকে শুনাতে হয়? কোন ব্যক্তি উষ্ণ জলে নবমলিকা সেচন করে?

 কিয়ৎ দিন পরে, মহর্ষি কণ্ব সোমতীর্থ হইতে প্রত্যাগমন করিলেন। এক দিন তিনি, অগ্নিগৃহে প্রবিষ্ট হইয়া, হোমকার্য্য সম্পাদন করিতেছেন, এমন সময়ে এই দৈববাণী হইল—মহর্ষে! রাজা দুষ্মন্ত, মৃগয়া উপলক্ষে তোমার ওপোবন আসিয়া, শকুন্তলার পাণিগ্রহণ করিয়া গিয়াছেন এবং শকুন্তলাও তৎসহযোগে গর্ভবতী হইয়াছেন। মহর্ষি, এই রূপে শকুন্তলার পরিণয়বৃত্তান্ত অবগত হইয়া, তাঁহার অগোচরে ও সম্মতি ব্যতিরেকে সম্পন্ন হইয়াছে বলিয়া, কিঞ্চিন্মাত্র ৱোষ বা অসন্তোষ প্রদর্শন করিলেন না; বরং যৎপরোনাস্তি প্রীত হইয়া কহিতে লাগিলেন, আমার পরম সৌভাগ্য যে শকুন্তলা এতাদৃশ সৎপাত্রের হস্তগত হইয়াছে। অনন্তর তিনি, প্রফুল্ল বদনে শকুন্তলার নিকটে গিয়া, সাতিশয় পরিতোষ প্রদর্শন করিয়া কহিলেন, বৎসে! তোমার পরিণয়বৃত্তান্ত অবগত হইয়া অনির্বচনীয় প্রীতি প্রাপ্ত হইয়াছি, এবং স্থির করিয়াছি, অবিলম্বে দুই শিষ্য ও গৌতমীকে সমভিব্যাহারে দিয়া,