পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
শকুন্তলা।

দেখাইও। শকুন্তলা শুনিয়া আতিশয় শঙ্কিত হইয়া কহিলেন, সখি! তোমরা এমন কথা বলিলে কেন, বল? তোমাদের কথা শুনিয়া আমার হৃৎকম্প হইতেছে। সখীরা কহিলেন, না সখি! ভীত হইও না; স্নেহের স্বভাবই এই, অকারণে অনিষ্ট আশঙ্কা করে।

 এই রূপে ক্রমে ক্রমে সকলের নিকট বিদায় লইয়া, শকুস্তলা গৌতমীপ্রভৃতি সমভিব্যাহারে দুষ্মন্তরাজধানী প্রতি প্রস্থান করিলেন। কণ্ব, অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা একদৃষ্টিতে শকুন্তলার দিকে চাহিয়া রহিলেন। ক্রমে ক্রমে শকুন্তলা দৃষ্টিপথের বহির্ভূত হইলে, অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা উচ্চৈঃ স্বরে রোপন করিতে লাগিলেন। মহর্ষি দীর্ঘ নিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া কহিলেন, অনসূয়ে! প্রিয়ংবদে! তোমাদের সহচরী প্রস্থান করিয়াছেন; এক্ষণে শোকাবেগ সংবরণ করিয়া, আমার সাহিত আশ্রমে প্রতিগমন কর। এই বলিয়া মহর্ষি আশ্রমাভিমুখে প্রস্থান করিলেন, এবং তাঁহারাও তাঁহার অনুগামিনী হইলেন। যাইতে যাইতে, মহর্ষি মনে মনে কহিতে লাগিলেন, যেমন স্থাপিত ধন ধনস্বামীকে প্রত্যর্পণ করিলে, লোক নিশ্চিন্ত ও সুস্থ হয়, তদ্রপ, অদ্য আমি শকুন্তলাকে পতিগৃহে প্রেরণ করিয়া নিশ্চিন্ত ও সুস্থ হইলাম।