পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত্রহীন সাবিত্রী রাগ করিয়া টাকাটা বিছানার উপর ফেলিয়া দিয়া বলিল, রেখে দিন আপনার টাকা । আমার বাবু সন্দেশ খেতে ভালবাসে না । সতীশ টাকাটা পুনরায় ফেলিয়া অনুনয়ের স্বরে কহিল, আমার মাথা খাও সাবিত্ৰী, এ টাকা কিছুতেই আমাকে ফিরুতে পারবে না, আমি সত্যিই তোমার বাবুকে সন্দেশ খেতে দিয়েচি । সাবিত্রী মুখ ভার করিয়া বলিল, যখন-তখন আপনি মেয়েমামুষের মত মাথার দিবি দেন, এ ভারি অন্যায়। বাবু টাবু আমার নেই। বাবু আমার আপনি— আপনারা । সতীশ হাসিয়া বলিল, আচ্ছা, দাও টাকা । কিন্তু বলে আমরা ছাড়া যদি আর কোন বাৰু থাকে ত তার মাথা খাই। সাবিত্রী হাসিয়া ফেলিল । বলিল, আমার বাৰু কি আপনার সতীন যে, মাখু খাচ্চেন ? সতীশ কছিল, আমি তার মাথা খাচ্চি, না তিনি আমার খাচ্চেন ? আমি ত বরং উাকে সন্দেশ খাওয়াচ্চি ! সাবিত্রী মুখ ফিরাইয়া হাসি দমন করিয়া হঠাৎ গম্ভীর হইয়া বলিল, চাকর-দাসীর সঙ্গে এ-রকম করে কথা কইলে ছোটলোক প্রশ্রয় পেয়ে যায়, আর মানে না, একটু বুঝে সমঝে কথা কইতে হয় বাৰু, নইলে লোকেও নিন্দ করে । বলিয়া টাকাটা তুলিয়া লইয়া সে ঘরের বাহির হইয়া গেল । কিন্তু অনতিকাল পরেই ফিরিয়া আসিয়। বলিল, আজ এবেলা কি রান্না হবে ? - রন্ধনশালা সম্পৰ্কীয় যাবতীয় ব্যাপারে সতীশ যে একজন গুণী লোক সে পরিচয় সাবিত্রী পূৰ্ব্বেই পাইয়াছিল। সেইজন্য প্রত্যহ সকালবেল একবার করিয়া আসিয়া সতীশের হুকুম লইয়া যাইত, এবং নিজে দাড়াইয়া থাকিয়া বামুনঠাকুরের দ্বারা সমস্তটুকু নিখুত করিয়া সম্পন্ন করাইয়া লইত । ইতিমধ্যে চাকর তামাক দিয়া গিয়াছিল, সতীশ আর একবার কাত হইয়া গুইয়া পড়িয়া বলিল, যা খুশি । সাবিত্ৰী বলিল, আবার রাগও আছে যে ! সতীশ দেওয়ালের দিকে মুখ ফিরাইয়া তামাক টানিতে টানিতে বলিল, পুরুষমানুষ, রাগ থাকবে না ? আজ আমি খাবও না । সাবিত্ৰী বলিল, আর কোথাও জুটেছে বোধ হয় ? কিন্তু সে যাই হোক সতীশবাবু, ইস্কুলে আপনাকে যেতেই হবে তা বলে রাখচি। এই অল্পকালের মধ্যেই নিয়মিত স্কুলে যাওয়া ব্যাপারটা পুনরায় সতীশকে বোঝার মত চাপিয়া ধরিতেছিল, এবং নানা ছলে নানা উপলক্ষে সে যে কামাই করিতে جسسسس الا :