পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (একাদশ সম্ভার).djvu/৪১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্র-সঙ্কলন সেই কি দেশের কম লাভ, কম গৌরব ? তোমার কাছেই একবার শুনেছিলাম ’ বিদেশীর "সিমফনি' বলে একটা জিনিস আছে, সেটা সত্যিই বড় জিনিস এবং তাকে তুমি দেশের সঙ্গীতকে দিতে চাও। তারপরে একদিন শুনলাম তুমি সব ছেড়ে বৈরিগী হয়ে গেছ। হঠাৎ মনে হয়েছিল আমার নিজেরই যেন একটা মুস্ত বড় লোকসান হয়ে গেছে । এ জীবনে তোমাকে হয়ত আর দেখতে পাবো না, একি মনে কয় আমাদের সোজা দুঃখ ? আর কেউ না বিশ্বাস করুক কিন্তু তুমি ত জানো। এই ব্যাপারটা যে আমাকে চিরদিনই গভীর দুঃখ দেবে সে বিষয়ে আমার সন্দেহ নেই। একটা মজার কথা শোন মন্ট সেদিন ব্যান্ধে গিয়েছিলাম একটা জরুরি কাজে l. ক্যাশিয়ার বাঙালী, শুনতে পেলাম একজন নাম-করা জ্যোতিধী—তিনি “ সযত্বে আমার কাজ-কৰ্ম্ম করে দিয়ে আমার কুষ্ঠি দেখতে চাইলেন। বললাম কুষ্ঠি তো নেই, কিন্তু রাশি-চক্রটা আমার নোট বইয়ে টোকা আছে। সেটা তখুনি তিনি টুকে নিলেন, আমার হাতের রেখার একটা ছাপ নিলেন। তার পরে রইলো তার কাজ-কৰ্ম্ম, ডেক্স থেকে পাজি-পুথি বার করে লেগে গেলেন গণনায় । বললেন কি জানো ? বললেন, এক বছরের মধ্যে আপনি অন্য পথ নেবেন। জিজ্ঞেস করলাম, অন্ত পথ মানে ? বললেন, Spiritual, আমি জবাব দিলাম, কুষ্টির ফল ওরকম আছে, সেকথা আমাকে কাশীর ভৃগু-বালারাও বলেছিল, কিন্তু আমি নিজে কানাকড়ি বিশ্বেল করিনে । কারণ আধ্যাত্মিকতার ‘অ’ আমার মধ্যে নেই। বললেন, এক বছর পরে যদি আবার দেখা হয় তখন এর উত্তর দেবো । আমি বললাম, এক বছর পরেও ঠিক এই কথাই আমার মুখ থেকে শুনবেন। তিনি শুধু ঘাড় নাড়লেন। তার বিশ্বাস কুঠির ফলাফল গুণতে জানলে মিথ্যে হয় না । মন্ট, একটা কথা বোধ করি পূর্বেও আমার কাছে শুনে থাকবে। আমাদের বংশের একটা ইতিহাস আছে। এই বংশে আমার মেজ ভাই ( প্রভাস ) vস্বামী বেদানন্দকে নিয়ে অখণ্ড ধারায় ৮ম পুরুষ সন্ন্যাসী হওয়া চললে –কেবল আমিইহোলাম একেবারে ঘোরতর নাস্তিক। Heredity—আমার রক্তে একেবারে উজান টানে স্বর ধরলে । সুতরাং, জীবনের পঞ্চান্ন বছর পার করে দিয়ে মৃতন convert পাবার অাশা কেউ যেন না করেন। কিন্তু খাজাঞ্জি ভদ্রলোক একেবারে নিঃসংশয় যে আমি বৈরিগী হবোই! তোমাদের অনিলবরণ [ রায় ] শুনেছি ধুলোকে চিনি করতে পারে। আশ্রমের সমস্ত চিনি নাকি তিনিই supply করেন,—এ কি সত্যি ? আমি অবশ্ন বিশ্বাস করিনে, কারণ, তাহলে সে আশ্রমে থাকতে যাবে কিসের জন্তে ? কলকাতায় এসে অনায়াসে তো একটা চিনির দোকান খুলতে পারতো । o e A