পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐীকান্ত লোকেরও দয়া হবে । জরে ভুগি, কিন্তু মরণ হয় না! মামা নিজেও নানা অস্থথে শয্যাগত, হঠাৎ খবর জুটলো দত্তদের বামুনঠাকুর আমাদের ঘর, মামার মতই স্বভাবকুলীন । বয়সে ষাটের কাছে । আমাদের দুবোনকেই একসঙ্গে তার হাতে দেওয়া হবে । সবাই বললে এ স্থযোগ হারালে আইবুড়ে নাম আর ওদের খণ্ডবে না । সে চাইলে একশ’, মামা পাইকিরি দর হাকলে পঞ্চাশ টাকা । এক আসনে একসঙ্গে —মেহন্নত কম । সে নাবলো পচাত্তরে, বললে, মশাই, দু-দুটো ভগিনীকে কুলীনে পার করবেন, একজোড়া রামছাগলের দাম দেবেন না ? ভোর-রাত্রে লগ্ন, দিদি নাকি জেগে ছিল, কিন্তু আমাকে পুটলি বেঁধে এনে উচ্ছগু্য করে দিলে। সকাল হতে বাকী পচিশ টাকার জন্যে ঝগড়, শুরু হ’লো। মামা বললেন, ধারে কুশণ্ডিকে হোক, সে বললে, সে অতো হাব নয়, এসব কারবারে ধারধোর চলবে না । সে গ|ঢাকা দিলে, বোধ হয় ভাবলে মামা খুঁজেপেতে এনে তাকে টাকা দিয়ে কাজটা সম্পূর্ণ করবেন। একদিন যায়, দু'দিন যায়, মা কাদাকাটা করেন, পাড়ার লোকের হাসে, মামা গিয়ে দন্তদের কাছে নালিশ করেন, কিন্তু বর আর এলো না । তাদের গায়ে খোজ নেওয়া হলো, সেখানে সে যায়নি। আমাদের দেখিয়ে কেউ বলে অধিকপালী, কেউ বলে পোড়াকপালী—দিদি লজ্জায় ঘরের বা’র হয় না—সেই ঘর থেকে ছ'মাস পরে বা’র করা হ’লো একেবারে শ্মশানে । আরও ছ’মাস পরে কলকাতার কোন একটা হোটেল থেকে খবর এল বর ও সেখানে রাধতে রাধতে জরে মরেচে। বিয়ে আর পুরো হলো না । বলিলাম, পচিশ টাকা দিয়ে বর কিনলে ঐরকমই হয় । রাজলক্ষ্মী বলিল, তবু ত সে আমার ভাগে পচিশ পেয়েছিল, কিন্তু তুমি পেয়েছিলে কি ? শুধু একছড়া বঁইচির মালা—তাও কিনতে হয়নি–বন থেকে সংগ্ৰহ হয়েছিল । কহিলাম, দাম না থাকলে তাকে অমূল্য বলে । আর একটা মানুষ দেখাও ত যে আমার মত অমূল্য ধন পেয়েচে ? তুমি বলে। ত এ কি তোমার মনের সত্যি কথা ? টের পাও না ? না গো না, পাইনে, সত্যি পাইনে—কিন্তু বলিতে বলতেই সে হাসিয়া ফেলিল, কহিল, পাই শুধু তখন যখন তুমি ঘুমোও—তোমার মুখের পানে চেয়ে ; কিন্তু সেকথা যাক । তোমাদের দুবোনের মত শাস্তিভোগ এদেশে কতশত মেয়ের কপালেই ঘটে । আর কোথাও বোধহয় কুকুর-বেড়ালেরও এমন দুৰ্গতি করতে মানুষের বুকে বাজে। এই বলিয়া সে ক্ষণকাল চাহিয়া থাকিয়া কহিল, হয়ত তুমি ভাবচ আমার নালিশট বাড়াবাড়ি, এমন দৃষ্টাস্ত আর ক'টা মেলে ? এর উত্তরে যদি বলতুম \3\డి