শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ পথিক । আর ত দেখা হবে না বাৰু, আমি পাঁচদিন আছি, কালই সকালে চলে যেতে হবে । জীবানন্দ । চলে যেতে হবে ? কিন্তু এই যে বললে তোমার পা এখনো সারেনি, তুমি হাটতে পার না ? পৰিক। মায়ের মন্দির এখন রাজাবাবুর। হুজুরের হুকুম তিনদিনের বেশী কেউ থাকতে পারবে না । - জীবানন্দ । (হাসিয়া ) ভৈরবী এখনও যায়নি, এরই মধ্যে হুজুরের হুকুম জারি হয়ে গেছে ? মা-চণ্ডীর কপাল ভালো! আচ্ছা, আজ অতিথিদের সেবা হলো কিরকম। কি খেলে ভাই ? পথিক । যাদের তিনদিনের বেশী হয়নি তারা মায়ের প্রসাদ সবাই পেলে । জীবানন্দ। আর তুমি ? তোমার ত তিনদিনের বেশী হয়ে গেছে ? পথিক। ঠাকুরমশাই কি করবেন, রাজাবাবুর হুকুম নেই কিনা। জীবানন্দ । তাই হবে। (এই বলিয়া দীর্ঘনিশ্বাস মোচন করিলেন । ) জীবানন্দ। কাল আমি আবার আসব, কিন্তু ভাই, চুপিচুপি চলে যেতে পাবে না। পথিক । ঠাকুরমশাই যদি কিছু বলে ? জীবানন্দ। বললেই বা। এত দুঃখ সইতে পারলে, আর বামুনের একটা কখা সইতে পারবে না ? রাত হ’লো, এখন যাই, কিন্তু মনে থাকে যেন । এমনি সময়ে ষোড়শী প্রদীপ-হস্তে ধীরে ধীরে প্রবেশ করিয়া মন্দিরের দ্বারের অভিমুখে অগ্রসর হইতেছিল, জীবানন্দ পিছন হইতে ডাক দিল ] জীবানন্দ । অলকা । ষোড়শী। ( চমকিয় ) আপনি ? এত রাত্রে আপনি এখানে কেন ? জীবানন্দ। কি জানি, এমনি এসেছিলাম। তুমি যাবার আগে ঠাকুর-প্ৰণাম করতে যাচ্ছ, না ? চল, আমি তোমার সঙ্গে যাই । ষোড়শী। অামার সঙ্গে যাবার বিপদ আছে সে ত আপনি জানেন ? জীবানন্দ । বিপদ ? জানি। কিন্তু আমার পক্ষ থেকে একেবারে নেই। আজ আমি একা এবং সম্পূর্ণ নিরস্ত্র। এ-জীবনে আর যাই কেন না স্বীকার করি আমার শক্ৰ আছে এ আমি একটা দিনও আর মানব না । - ষোড়শী। কিন্তু কি হবে আমার সঙ্গে গিয়ে ? জীবানন্দ। কিছুই না। শুধু যতক্ষণ আছ সঙ্গে থাকব, তার পর যখন সময় হবে তোমাকে গাড়িতে তুলে দিয়ে আমি বাড়ি চলে যাব । যাবার দিনে আজ আর '
- ●