পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/৩৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরণ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ খেতাম, বহুদিন পরে অকস্মাং মণির একটা পত্র পেয়ে মন কেমন করে উঠলো, কোনমতে ভাড়াটা যোগাড় করে চলে এলাম। মোটামুটি এই আমার পরিচয়, এর মধ্যে মিথ্যে একটুও নেই। কথাগুলি বলার এমন একটি সরল আবেদন যে, যে ক্রোধ মনের মধ্যে নিয়ে এককড়ি এখানে এসেছিল তার অনেকখানিই শাস্ত হয়ে গেল। ইচ্ছে হ’লে এই প্রসঙ্গে সদয়-কণ্ঠে একটু আলাপ করে, কিন্তু তাও পারলে না, জলধির অভিযোগ বাধা দিলে। তাই বলি বলি করেও চুপ করে বসে রইলো। মণি প্রশ্ন করলে, আজকের অধিবেশনের কি হ’লে এককড়িদা ? অধিবেশন হয়নি। স্থগিত রইলো । কেন ? আমি মা যাবার জন্যে নয় ত ? কতকটা তাই বটে। আজ কি তুমি খুব অস্বস্থ ? মা, ঠাণ্ড লেগে সামান্য একটু জরের মতো হয়েছে, অনায়াসে যেতে পারতাম জলধিবাবু ধারণ না করলে। বললেন, আটকাবে না, আজকের দিনটা তিনি বেশ চালিয়ে নিতে পারবেন । তাই যাইনি এককড়িদা । গুনে এককড়ি ভারি বিম্মিত হ’লে, জিজ্ঞাসা করলে, জলধি কি তোমাকে যেতে বারণ করেছিলো ? ই, বারণই ত করলেন। একটু থেমে মণি বললেন, অথচ এমন দিম গেছে যখন সত্যই বড় অস্বস্থ যয়ে ছুটি চেয়েও পাইনি। আমাকে জানাওনি কেন ? - মণি চুপ করে রইলো, কিন্তু তার হয়ে জবাব দিলে রমেন। বললে, একটা কারণ বোধ করি এই যে, উপরি-ওয়ালার বিরুদ্ধে নালিশ করা ওঁর স্বভাব নয়। ওঁর স্বভাবের খবর আপনি জানলেন কি করে ? আবার আপনি দাদা ? বরঞ্চ আর কোথাও উঠে যাবে, তবু বসে বলে আপনার মুখ থেকে আপনি আজ্ঞে শুনতে পারবে না। এককড়ি হেসে বললে, বেশ তুমিই সই। বল তো রমেন, ওর স্বভাবের পরিচয় তুমি পেলে কি করে ? শুনছি থাকতে ইউরোপে, বহুদিন কেউ কারও খবর রাখোনি—এই ত সেদিন মাত্র দেশে ফিরেছ। সবই সত্যি দাদা। তবু আশ্চৰ্য্য হয়ে ভাবি, সহসা কেন যে মণি আমার সংবাদ নিতে গেল, আর আমিই বা কেন তেমনি হঠাৎ সব-কিছু পিছনে ফেলে চলে- এলাম। কিন্তু সে-কথা থাকৃ, আপনার প্রশ্নের জবাব দিই। ছেলেবেলায় ওর আমি মাস্টার ছিলাম। ম্যাট্রিক ক্লাশে পড়ি, মণি পড়ে আমার দু’কাশ নীচে। ষে-ভদ্রলোকটি আমার ইস্কুলের মাইলে, বইয়ের দাম যোগাতেন, হঠাৎ একদিন Wołg