পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (প্রথম সম্ভার).djvu/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষ্ট্ৰকান্ত গ্রহণ করিতে পার নাই। পারিলে এই বুটায় তোমাকে ভুলাইতে পারিত अl । ● তা বটে। তর্ক আর নয়। আমি টের পাইয়াছি মানুষ শেষ পর্য্যস্ত কিছুতেই নিজের সমস্ত পরিচয় পায় না। সে যা নয়, তাই বলিয়া নিজেকে জানিয়া রাখে এবং বাহিরে প্রচার করিয়া শুধু বিড়ম্বনার স্বষ্টি করে ; এবং যে দণ্ড ইহাতে দিতে হয়, তা নিতান্ত লঘুও নয়। কিন্তু থাকৃ। আমি ত নিজে জানি, আমি কোন নারীর আদর্শে এতদিন কি কথা ‘প্রিচং করিয়া বেড়াইয়াছি। স্বতরাং আজ আমার এ দুর্গতির ইতিহাসে লোকে যখন বলিবে, শ্ৰীকান্তটা হম্বগ, হিপোক্রিটু, তখন আমাকে চুপ করিয়াই শুনিতে হইবে। অথচ হিপোক্রিটু আমি ছিলাম না ; হম্বগ করা আমার স্বভাব নয়। আমার অপরাধ শুধু এই যে, আমার মধ্যে যে দুৰ্ব্বলতা আত্মগোপন করিয়াছিল, তাহার সন্ধান রাখি নাই । আজ যখন সে সময় পাইয়া মাথাঝাড়া দিয়া উঠিয়া, তাহারই মত আর একটা দুৰ্ব্বলতাকে সাদরে আহবান করিয়া, একেবারে অন্দরের মধ্যে লইয়া বসাইয়া দিয়াছে, তখন অসহ বিস্ময়ে আমার চোখ দিয়া জল পড়িয়াছে, কিন্তু যাও বলিয়া তাহাকে বিদায় দিতে পারি নাই। ইহাও জানিয়াছি, আজ আমার লজ্জা রাখিবার ঠাই নাই ; কিন্তু পুলক ষে হৃদয়ের কানায় কানায় আজ ভরিয়া উঠিয়াছে! লোকসান যা হয় তা হোক, হৃদয় যে ইহাকে ত্যাগ করিতে চাহে না । বাবুলাব! রাজভৃত্য আসিয়া উপস্থিত হইল। শয্যার উপর সোজা উঠিয়া বসিলাম । সে সসম্মানে নিবেদন করিল, কুমারসাহেব এবং বহুলোক আমার গতরাত্রির কাহিনী শুনিবার জন্য উদগ্রীব হইয়া অপেক্ষা করিতেছে। প্রশ্ন করিলাম, র্তারা জানিলেন কিরূপে ? বেহার কহিল, তাবুর দরোয়ান জানাইয়াছে যে, আমি রাত্রিশেষে ফিরিয়৷ আসিয়াছি। হাত-মুখ ধুইয়া, কাপড় ছাড়িয়া বড় তাবুতে প্রবেশ করিবামাত্র সকলে হৈ হৈ করিয়া চীৎকার করিয়া উঠিল। একসঙ্গে একলক্ষ প্রশ্ন হইয়া গেল। দেখিলাম, কালকের সেই প্রবীণ ব্যক্তিটিও আছেন, এবং একপাশে পিয়ারী তাহার দলবল লইয়া নীরবে বসিয়া আছে। প্রতিদিনের মত আজ আর তাহার সহিত চোখাচোধি হইল না । সে যেন ইচ্ছা করিয়া আর একদিকে চোখ ফিরাইয়া ৰসিয়াছিল। উচ্ছ্বসিত প্রশ্বতরঙ্গ শাস্ত হইয়া আসিলে জবাব দিতে শুরু করিলাম। কুমারঙ্গী কছিলেন, ধন্ত সাহস তোমার শ্রীকান্ত ! কত রাত্রে সেখানে পৌছলে । ৰারোক্ট থেকে একটার মধ্যে । 孕》