দ্বিধা
তার মাকে জানে না; যখনি মাতার মধ্য হতে মুক্ত হয়ে সে নিজেকে জানে তখনি সে মাকে জানে।
সেইজন্যে যতক্ষণ স্বার্থের নাড়ীর বন্ধন ছিন্ন করে মানুষ এই মঙ্গললোকের মধ্যে জন্মলাভ না করে ততক্ষণ তার বেদনার অন্ত নেই। কারণ, যেখানে তার চরম স্থিতি নয়, যেখানে সে অসম্পূর্ণ, সেখানেই চিরদিন স্থিতির চেষ্টা করতে গেলেই তাকে কেবলই টানাটানির মধ্যে থাকতে হবে। সেখানে সে যা গড়ে তুলবে তা ভেঙে পড়বে, যা সংগ্রহ করবে তা হারাবে, এবং যাকে সে সকলের চেয়ে লোভনীয় বলে কামনা করবে তাই তাকে আবদ্ধ করে ফেলবে।
তখন কেবল আঘাত, কেবল আঘাত। তখন পিতার কাছে আমাদের কামনা এই: মা মা হিংসীঃ! আমাকে আঘাত কোরো না, আমাকে আর আঘাত কোরো না! আমি এমন করে কেবলই দ্বিধার মধ্যে আর বাঁচি নে!
কিন্তু, এ পিতারই হাতের আঘাত, এ মঙ্গললোকের আকর্ষণেরই বেদনা। নইলে পাপে দুঃখ থাকত না— পাপ বলেই কোনো পদার্থ থাকত না, মানুষ পশুদের মতো অপাপ হয়ে থাকত। কিন্তু, মানুষকে মানুষ হতে হবে বলেই এই দ্বন্দ্ব, এই বিদ্রোহ বিরোধ, এই পাপ, এই পাপের বেদনা।
তাইজন্যে মানুষ ছাড়া এ প্রার্থনা কেউ কোনোদিন করতে পারে না ‘বিশ্বানি দেব সবিতর্দুরিতানি পরাসুব’—হে দেব, হে পিতা, আমার সমস্ত পাপ দূর করে দাও! এ ক্ষুধামোচনের প্রার্থনা নয়, এ প্রয়োজনসাধনের প্রার্থনা নয়; মানুষের প্রার্থনা হচ্ছে, ‘আমাকে পাপ হতে মুক্ত করো। তা না করলে আমার দ্বিধা ঘুচবে না। পূর্ণতার
১০৫