বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সত্য হওয়া করতে পারছি নে— তবু মানুষকে এক দিকে আকাশে মাথা তুলে এবং এক দিকে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে বলতে হবে যে, ‘সত্যং জ্ঞানমনস্তং ব্ৰহ্ম’ এই কথাই সত্য। এই সত্য, এই সত্য, এই সত্য— প্রতিদিন বলতে হবে ; বিমুখ মনকেও বলাতে হবে ; ক্ষীণ কণ্ঠকেও উচ্চারণ করাতে হবে। নিয়ত বলতে বলতে আমরা যে সত্যলোকে বাস করছি এই বোধটি ক্রমশই আমাদের কাছে সহজ হয়ে আসবে। তখন অর্ধচেতন অবস্থায় দিন কাটবে না, তখন বারবার ধুলোর উপর পড়ে পড়ে যাব না, তখন আলোর দিকে আকাশের দিকে মাথা তুলে চলতে শিখব, তখন বাইরের সমস্ত বস্তুকেই আমার আত্মার চেয়ে বড়ো করে জানব না, এবং প্রবৃত্তির প্রবল উত্তেজনাকেই প্রকৃত আত্মপরিচয় বলে মনে করব না । ব্ৰহ্মকে সহজ করে জানবার শক্তিই আমাদের সত্যকার শক্তি ; সেই শক্তি আমাদের আছে, জানতে পারছি নে বলে সে শক্তিকে কখন্মুেই অস্বীকার করব না। বারবার তাকে ডাকতে হবে— বারবার তাকে বলতে হবে, এই তুমি, এই তুমি, এই তুমি । এই তুমি আমার সম্মুখেই, এই তুমি আমার অস্তরেই। এই তুমি আমার প্রতি মুহূর্তে, এই তুমি আমার অনস্ত কালে।’ বলতে বলতে তার নামে আমার সমস্ত শরীর বাজতে থাকবে, আমার মন বাজতে থাকবে, আমার বাহির বাজতে থাকবে, আমার সংসার বাজতে থাকবে । আমার চিত্ত বলবে ‘সত্যং’, আমার বিশ্বচরাচর বলবে ‘সত্যং’ । ক্রমে আমার প্রতি দিনের প্রত্যেক কৰ্ম বলতে থাকবে ‘সত্যং’ । বেহালা-যন্ত্র মতই পুরাতন হয় ততই তার মূল্য বেশি হয়— তার কারণ, অনেক দিন থেকে স্বর বাজতে বাজতে বেহালার কাঠফলকের পরমাণুগুলি স্বরের ছন্দে ছন্দে স্থবিন্যস্ত

ዓ » n