বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সত্যকে দেখা পারা যায় যে, এই পৃথিবীর মাটি আমাকে ধরে আছে এ কথাটি সত্য নয়, তিনিই আমাকে ধরে আছেন— এই সংসার আমার আশ্রয় এ কথাটি সত্য নয়, তিনিই আমার আশ্রয়। তখন এ কথা বুঝতে কিছু বিলম্ব হবে না যে, আলোক অাছে বলে দেখছি তা নয়, তিনিই আমার অস্তরে ও বাইরে সত্য হয়ে আছেন বলেই সমস্ত জিনিসের সঙ্গে আমার দেখার যোগ হচ্ছে— তার শক্তিতেই তাকে দেখছি— তারই ধী দিয়ে তাকে ধ্যান করছি, তারই সুরে আমার কণ্ঠ তারই নাম করছে, তারই আনন্দে আমি তার স্মরণে আনন্দ পাচ্ছি । _ তাই আমি তোমাদের বলছি, তোমরা জান বা না জান তোমাদের গভীর আত্মার পরম চাওয়ার ধন হচ্ছেন তিনি। আমাদের এই আমি সেই পরম আমির মুখোমুখি হয়ে না বসতে পারলে কখনোই তার প্রেম চরিতার্থ হবে না । আর-সমস্তকে সে ধরছে, ছাড়ছে, হারাচ্ছে ; তাই সে এমন একটি আমিকে আপনার প্রত্যক্ষ বোধে চাচ্ছে যার মধ্যে সে চিরন্তনরূপে সম্পূর্ণরূপে আছে– অন্য জিনিসের মতে যাকে ধরতে হয় না, ছুতে হয় না, রাখতে হয় না। আমাদের এই ভিতরকার একলা আমি সেই-যে তার পরম সাথিকে সাক্ষাৎ করে জানতে চায় তার কান্না কি শুনতে পাচ্ছ না? তাকে আর তুমি পদে পদে ব্যর্থ কোরো না- তার কান্না থামাও । তোমার জাপনকে তুমি আপনি সার্থক করবার জন্যে এসে এসো, প্রতিদিন সাধনায় বোসো। সকালে ঘুম | ভেঙেই প্রথম কথা যেন মনে পড়ে, তিনি আছেন, আমি তার মধ্যে আছি। যদি অধরাত্রে জেগে ওঠ তবে একবার চোখ চেয়ে দেখে মনকে এই কথাটি বলিয়ে নিয়ে যে, তিনি তার সমস্ত লোক লোকান্তরকে নিয়ে অন্ধকারকে পরিপূর্ণ করে নিন্তব্ধ হয়ে আছেন, আমি তার মধ্যেই · : ዓ¢