পিতার বোধ কেমন করে অবরুদ্ধ করে ফেলছি তখন মনে ভয় হয়— মনে করি, সস্তানের নমস্কার বুঝি এ জীবনের শেষদিন পর্যস্ত আর সম্পূর্ণ হতে পারল না, মানুষের জীবনে ষে রস সকল রসের সার সেই পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণের মধুরতম রসটি হৃদয়ের মধ্যে বুঝি কণামাত্রও জায়গা পেল না । কেমন করেই বা পাবে ! শুষ্ক যে সে আপনার শুষ্কতা নিয়েই গর্ব করে, ক্ষুদ্র যে সে যে আপনার ক্ষুদ্রতা নিয়েই উদ্ধত হয়ে ওঠে । স্বাতন্ত্র্যের সংকীর্ণতাকে ত্যাগ করতে গেলে সে যে কেবলই মনে করে, “আমি আমার আত্মাকেই খর্ব করলুম। সে যে নমস্কার করতে চাচ্ছেই না। তার এমনই দুর্দশা যে উপাসনার সময় যখন সে তোমার কাছে আসে তখনও সে আপনার অহংটাকেই এগিয়ে নিয়ে আসে । সংসারক্ষেত্রে যেখানে সমস্তই আত্মপর ও উচ্চনীচের দ্বারা আমরা সীমাচিহ্নিত করে রেখেছি, সেখানে সর্বলোকপিতা যে তুমি, তোমাকে নমস্কার করবার তো জায়গাই পাই নে ; তোমাকে সত্যকার নমস্কার করতে গেলে সকল দিকেই নানা দেয়ালেই মাথা ঠেকে যায়। কিন্তু, তোমার এই পূজার ক্ষেত্রে যেখানে কেবল ক্ষণকালের জন্যেই আমরা পরিচিত অপরিচিত, পণ্ডিত মূখ, ধনী দরিদ্র, তোমারই নামে একত্র সমবেত হই, সেখানেও যে মুহূর্তেই আমরা মুখে উচ্চারণ করছি ‘পিতা নোহসি ! তুমি আমাদের সকলের পিতা! তুমিই আছ! তুমিই সত্য সেই মুহূর্তেই আমরা মনে মনে লোকের জাতি বিচার করছি, বিদ্যা বিচার করছি, সম্প্রদায় বিচার করছি। যখনই বলছি নমস্তেহস্তু তখনই নমস্কারকে অন্তরে কলুষিত করছি। সকলের পিতা বলে যে অসংকুচিত নমস্কার তোমাকেই দিতে এসেছি তার অধিকাংশই তোমার কাছ থেকে হরণ করে নিয়ে আমার \Oo S
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১২
অবয়ব