শাস্তিনিকেতন জন্য সত্যের সঙ্গে মিথ্যাকে যে পরিমাণে মেশানো দরকার সেই মেশানোর ভার আমার উপর— এমন সব স্পধর্ণবাক্য আমরা এতদিন বলে এসেছি। ইতিহাসবিধাতা সেই স্পর্ধা চূর্ণ করবেন না! মানুষ অন্ধ জড়প্রথার কারাপ্রাচীর যেখানে অভ্ৰভেদী করে তুলবে এবং সত্যের জ্যোতিকে প্রতিহত করবে, সেখানে তার বজ্র পড়বে না ! তিনি এ কেমন করে সহ করবেন! , তিনি কি বলতে পারেন যে তিনি বন্দী ! তিনি এ কথা বললে সংসারকে কে বাচাবে ! তিনি বলেছেন, ‘সত্য মুক্ত, আমি মুক্ত, সত্যের পথিক তোমরা মুক্ত।’ এই উদবোধনের মন্ত্র মুক্তির মন্ত্ৰ— এখনই নক্ষত্রমণ্ডলীর মধ্যে ধ্বনিত হচ্ছে ; অনন্তকাল জাগ্রত থেকে তারা সেই জ্যোতির্ময় মন্ত্র উচ্চারণ করছে, জপ করছে এই মন্ত্র সেই চিরজাগ্রত তপস্বীরা । জাগ্রত হও, জাগ্রত হও । প্রাচীর দিয়ে বঁধিয়ে সত্যকে বন্দী করে রাখবার চেষ্টা কোরো না । সত্য তা হলে নিদারুণ হয়ে উঠবে— যে লোহার শৃঙ্খল তার হাতকে বাধবে সেই শৃঙ্খল দিয়ে তোমার মস্তকে সে করাঘাত করবে। রুদ্ধ সত্যের সেই করাঘাত কি ভারতবর্ষের ললাটে এসে পড়ে নি ? সত্যকে ফঁাসি পরাতে চেয়েছে যে দেশ সে দেশ কি সত্যের আঘাতে মূৰ্ছিত হয় নি ? অপমানে মাথা হেঁট হয় নি ? সইবে না বন্ধন— বড়ে দুঃখে ভাঙবে, বড়ো অপমানে ভাঙবে । সেই উদবোধনের প্রলয়মন্ত্র পুথিবীতে জেগেছে, সেই ভাঙবার মন্ত্র জেগেছে। বসে থাকবার নয়, কোণের মধ্যে তামসিকতায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে থাকৰার নয়— চলবার, ভাঙবার ডাক সমাজ এসেছে । আজকের সেই উৎসব সেই সত্যের মধ্যে উদবোধিত হবার উৎসব । , , , . . . আমরা সেই মুক্তির মন্ত্র পেয়েছি। কালের স্রোতে ডুবল না লক্ষ্যং • Woo & 9.
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৬৫
অবয়ব