পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২৬ শাস্তিনিকেতন তখন আমাদের একমাত্র সহায় নিষ্ঠ । শুষ্ক চিত্তের মৃতভারকে সেই বহন করতে পারে। , মরুভূমির পথে যাদের চলতে হয় তাদের বাহন হচ্ছে উট। অত্যন্ত শক্ত সবল বাহন— এর কিছুমাত্র শৌখিনতা নেই। খাদ্য পাচ্ছে না তবু চলছে। পানীয় রস পাচ্ছে না তৰু চলছে। বালি তপ্ত হয়ে উঠেছে তৰু চলছে, নিঃশব্দে চলছে। যখন মনে হয় সামনে বুঝি এ মরুভূমির অস্ত নেই, বুঝি মৃত্যু ছাড়া আর গতি নেই, তখনও তার চল বন্ধ হয় না। | r ..) 曾 | তেমনি শুষ্কতা রিক্ততার মরুপথে কিছু না খেয়ে, কিছু না পেয়েও, আমাদের চালিয়ে নিয়ে যেতে পারে সে কেবল নিষ্ঠা— তার এমনি শক্ত প্রাণ যে নিন্দাগ্নানির ভিতর থেকে, কাটাগুল্মের মধ্যে থেকেও, সে নিজের খাদ্য সংগ্রহ করে নিতে পারে। যখন মরুবায়ুর মৃত্যুময় ঝঞ্চ উন্মত্তের মতো ছুটে আসে, তখন সে ধুলোর উপর মাথা সম্পূর্ণ নত করে ঝড়কে মাথার উপর দিয়ে চলে যেতে দেয়। তার মতো এমন ধীর সহিষ্ণু এমন অধ্যবসায়ী কে আছে ? একঘেয়ে একটানা প্রান্তর— মাঝে মাঝে কেবল কল্পনার মরীচিকা পথ ভোলাতে আসে। সার্থকতার বিচিত্র রূপ ক্ষণে ক্ষণে দেখা দেয় ন। মনে হয়, যেন কালও যেখানে ছিলুম আজও সেখানেই আছি। মন দিতে চাই, মন ঘুরে বেড়ায় ; হৃদয়কে ডাকাডাকি করি, হৃদয় সাড়া দেয় না। কেবলই মনে হয়, ব্যর্থ উপাসনার চেষ্টায় ক্লিষ্ট হচ্ছি। কিন্তু, সেই ব্যর্থ উপাসনার ভয়ানক ভার বহন করে নিষ্ঠ প্রত্যেক দিনই চলতে পারে— দিনের পর দিন, দিনের পর দিন। অগ্রসর হচ্ছেই, অগ্রসর হচ্ছেই— প্রতিদিন যে গম্য স্থানের কিছু কিছু করে কাছে আসছে তাতে সন্দেহমাত্র নেই। ওই দেখে হঠাৎ একদিন কোথা হতে ভক্তির ওয়েসিস দেখা দেয়— মৃদুরপ্রসারিত দগ্ধ