পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন "שר ס কিন্তু এই প্রমোদভবনের স্বর্ণখচিত অন্তঃপুরের মাঝখানে বসে কাব্যলক্ষ্মী বৈরাগ্যবিকল চিত্তে কিসের ধ্যানে নিযুক্ত ছিলেন ? হৃদয় তো র্তার এখানে ছিল না। তিনি এই আশ্চর্য কারুবিচিত্র মাণিক্যকঠিন কারাগার হতে কেবলই মুক্তি কামনা করছিলেন। কালিদাসের কাব্যে বাহিরের সঙ্গে ভিতরের অবস্থার সঙ্গে আকাঙ্ক্ষার একটা দ্বন্দ্ব আছে। ভারতবর্ষে যে তপস্যার যুগ তখন অতীত হয়ে গিয়েছিল, ঐশ্বৰ্ধশালী রাজসিংহাসনের পাশে বসে কবি সেই নির্মল স্বদুর কালের দিকে একটি বেদনা বহন করে তাকিয়ে ছিলেন। i রঘুবংশ কাব্যে তিনি ভারতবর্ষের পুরাকালীন সূর্যবংশীয় রাজাদের চরিতগানে যে প্রবৃত্ত হয়েছিলেন তার মধ্যে কবির সেই বেদনাটি নিগৃঢ় হয়ে রয়েছে। তার প্রমাণ দেখুন। 幽 আমাদের দেশের কাব্যে পরিণামকে অশুভকর ভাবে দেখানো ঠিক প্রথা নয়। বস্তুত যে রামচন্দ্রের জীবনে রঘুর বংশ উচ্চতম চুড়ায় অধিরোহণ করেছে সেইখানেই কাব্য শেষ করলে তবেই কবির ভূমিকার বাক্যগুলি সার্থক হত । f তিনি ভূমিকায় বলেছেন : সেই র্যারা জন্মকাল অবধি শুদ্ধ, যারা ফলপ্রাপ্তি অবধি কৰ্ম করতেন, সমুদ্র অবধি র্যাদের রাজ্য এবং স্বর্গ অবধি যাদের রথবয় ; যথাবিধি র্যারা অগ্নিতে আহুতি দিতেন, যথাকাম যারা প্রার্থীদের অভাব পূর্ণ করতেন, যথাপরাধ যারা দণ্ড দিতেন এবং যথাকালে ধারা জাগ্রত হতেন ; যারা ত্যাগের জন্যে অর্থ সঞ্চয় করতেন, যারা সত্যের জন্যে মিতভাষী, যারা যশের জন্য জয় ইচ্ছা করতেন এবং সস্তানলাভের জন্য যাদের দারগ্রহণ ; শৈশবে যারা বিদ্যাভ্যাস করতেন, যৌবনে যাদের বিষয়সেবা ছিল, বার্ধক্যে যার মুনিবৃত্তি গ্রহণ করতেন এবং যোগাস্তে যাদের দেহত্যাগ হত— আমি বাকসম্পদে দরিদ্র হলেও সেই রঘুরাজদের বংশকীর্তন করব, কারণ তাদের গুণ