পাতা:শান্তিলতা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জন্য সরে গিয়েছিল, ফিরে এসে এবার আবার সেইখানে দাড়াতে চায় । কিন্তু কয়েকজন তাদের এ দাবি মানতে রাজী নয়। তারা বলেছে, এবার এদের দাড়াতে হবে সকলের পিছনে । কারণ, তাই-ই নিয়ম। জলাৰ্থীদের রাস্তায়-দাড়ানো পার্লামেণ্টের অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত আইন। অনেকটা বিমল আর মোতিলালের চেষ্টাতেই আইনটা পাশ হয়েছিল। শুধু লাইনে দাঁড়ানোর নিয়ম নয়, অন্যান্য ধারায় একজন ক-বালতি জল পাবে, কখন খাবার জল নেওয়া ছাড়া মুখ হাত ধোওয়া পৰ্যন্ত চলবে না, কখন চলবে। — এ সব বিষয়ে নিয়ম ঠিক করা হয়েছে, সকলে স্বীকার করেছে নিয়ম মেনে চলবে । নানা অবস্থার নানা বয়সের লোক এসে কলে ভিড় করত । বস্তি থেকে আরম্ভ করে অধিকাংশ দোকানপাট ঘরবাড়ির আনাচ বিশেষ করে এই ভোরের দিকে। প্ৰতিদিন হাতাহাতির উপক্রম হত, ছোটখাট ঝগড়া বেধেও যেত প্ৰায়ই । ভোরে মজুর বেশি হাজির থাকায় মারামারিটা গড়াত না, অল্পেই থেমে যেত । বিমলষ্ট একদিন সকলের জন্য এক রকম নিয়ম চালু করার কথা বলে, মোতিলাল খুব উৎসাহিত হয়ে ওঠে। বালতি কলসী বসিয়ে রেখে, এমন কি আগের রাত্ৰে ভাঙা মাটির কলসী বসিয়ে লাইনে জায়গা দখল করে রাখা নিয়েই ঝগড়া হত। সবচেয়ে বেশি। তাই নিয়ম হয়, লাইনে যে হাজির থাকবে তারই জল নেবার অধিকার-- বালতি-কলসীর নয়। লাইন ছেড়ে চলে গেলে ফিরে এসে সকলের পিছনে দাড়াতে হবে। Sq