পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৮
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

নির্ম্মাণ করিয়াছেন, কিন্তু তাহাতে তিনি থাকেন না। রাজধানী ছাড়িয়া কলিকাতায় এই রক্ষিতা বারনারীর নিকটেই অবস্থান করেন। এদিকে তাঁর সোনার পুরী শিয়াল কুকুরের আবাস স্থল হইতেছে, প্রজাগণের দুর্দ্দশার একশেষ— সুব্যবস্থা ও শাসনের অভাবে ঋণের পরিমাণ দিন দিন বাড়িতেছে। গরীব প্রজার রক্ত শোষণ করিয়া তাহ। নটীর পূজায় ব্যয় করিতেছেন। নবাব বাদসার মত লোক পতিতার প্রেমে মজিবে, ইহাতে নূতনত্ব নাই। তবে এ কথা এখানে উল্লেখ করিলাম কেন! তাহার কারণ আছে; সুশীলার ঘরে যাইয়া প্রায়ই দেখিতাম নগবের রাজধানী হইতে বহুমূল্য আসবাব পত্র, ছবি, পর্দা, হীরা, জহরৎ, আয়না, গজদন্তের কারুকার্য খচিত দ্রব্য— এ সমস্ত আসিতেছে। ইহার কোন কোনটি বিক্রয় করা হইত— কোনটি বা সুশীলার ঘরেই শোভা পাইত। এই সকল দ্রব্য নবাবের পূর্ব্ব-পুরুষগণের কীর্ত্তি চিহ্ন স্বরূপ রাজধানীর পুরাতন প্রাসাদে সজ্জিত ছিল। ঐতিহাসিক কীর্ত্তিদর্শনার্থীরা তাহা দেখিয়া অতীত গৌরবের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করিত। একটা তুচ্ছ বেশ্যার মনস্তুষ্টির জন্য এই কীর্ত্তিচিহ্নসমূহ কি মুর্খের মত ধ্বংস করা হইতেছে, তাহা ভাবিয়া আমি দুঃখ করিতাম। যাহারা পূর্ব্বপুরুষের প্রতি এমনি শ্রদ্ধাহীন, তাহারা পরাধীন হইবেনা ত হইবে কে?

 সুশীলার বেড়াইবার জন্য মোটর গাড়ী ক্রয় করা হইয়াছে। সুশীলা নবাবের প্রধানা বেগমের চেয়ে অধিক ঐশ্বর্য্য— অধিক আদর যত্নে আছে। নবাব ঋণ করিয়া, মনি-মুক্তাদি বন্ধক রাখিয়া সুশীলার একহাজার টাকা মাসোহারা জোগাইতেছেন। ঋণের